সংস্কার ছাড়া ভোট মানে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা: হুঁশিয়ারি জামায়াতের
পিআর ছাড়া নির্বাচন মানবে না জনগণ, নির্বাচনী সংস্কার নিশ্চিত করার দাবি—ঢাকা উত্তরে ও দক্ষিণে জামায়াতের গণমিছিল ও কড়া বক্তব্য


এবিএনএ: নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলে তা জনগণের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে গণ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা। মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালী ও পল্টনে পৃথক দুই সমাবেশ ও গণমিছিলে এই হুঁশিয়ারি দেন দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এবং সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির দাবি
ঢাকা মহানগর উত্তরের সমাবেশে ডা. তাহের বলেন, “গতানুগতিক পদ্ধতিতে আর কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। জনগণের রক্তে রঞ্জিত জুলাই বিপ্লবকে যদি অগ্রাহ্য করে কোনো পক্ষ নির্বাচন আয়োজন করে, তবে তা ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হবে।”
তিনি বলেন, দলটি সংসদ নির্বাচন পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে চায়, যাতে ভোট চুরি, কেন্দ্র দখল কিংবা অর্থের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন সম্ভব হয়। তার মতে, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কেবল পিআর ব্যবস্থাতেই সম্ভব।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে কড়া সমালোচনা
বিএনপির প্রস্তাবিত নির্বাচন পদ্ধতির বিরোধিতা করে ডা. তাহের বলেন, “যাদের জনগণের সমর্থন নেই, তারাই পিআর ব্যবস্থার বিরোধিতা করছেন। তারা মাস্তানি ও টাকার জোরে নির্বাচনে জিততে চায়।” তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনি বা আপনার পরিবার আন্দোলনের অংশ ছিলেন না, তাই দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার মতো সংস্কার আনুন।”
দক্ষিণে সমাবেশে পরওয়ারের বক্তব্য
পল্টনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সমাবেশে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হোক কিংবা জুনে—প্রথমে দরকার সঠিক সংস্কার ও অতীত গণহত্যার বিচার।”
তিনি অভিযোগ করেন, “একটি দল নিজেদের রাষ্ট্রের মালিক মনে করে সংস্কারকে নিজের মতো চালাতে চায়। তারা এখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চাইছে।”
পরওয়ার আরও বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেভাবে গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করেছিলেন, তেমনভাবেই জুলাই সনদের বাস্তবায়ন সম্ভব। তাতে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়।”
মিছিল ও শেষ বক্তব্য
উত্তরের গণমিছিল মহাখালী থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় মগবাজার চৌরাস্তায় এবং দক্ষিণের মিছিল পল্টন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত যায়। দুই সমাবেশেই দলীয় নেতারা সরকারের প্রতি নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে বলেন—সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে না এবং জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করবে।