জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানের মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালের ফাঁসি, সাবেক আইজিপি মামুনের কারাদণ্ড
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথমবারের মতো সাবেক সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক রায়


এবিএনএ: জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণা করে। সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। মানবতাবিরোধী অপরাধে দেশের কোনো সাবেক সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম দণ্ডাদেশ।
রায়ের দ্বিতীয় অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রথম অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ড্রোন, হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধান প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেন।
রায়ে ছয়টি ভাগে মোট ৪৫৩ পৃষ্ঠায় অভিযোগ, সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি, রোম স্ট্যাটিউটের বিধান, ভিডিও–অডিও প্রমাণ এবং সাক্ষ্যসমূহ তুলে ধরা হয়। আদালত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এএসএম মাকসুদ কামাল, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও আদালতে তুলে ধরে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা, এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার ভিডিও–তথ্যও রায়ে উল্লেখ করা হয়।
মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন থেকেও গুরুত্বপূর্ণ অংশ আদালতে পড়ে শোনানো হয়। দুপুর দেড়টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়ে রায় ঘোষণা করা হয়।
গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার পর ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করে ট্রাইব্যুনাল। সে অনুযায়ী আজ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করা হয়। রায়টি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করে, যা অন্যান্য গণমাধ্যমও রিলে করে।




