জাতীয়

শিবিরের প্রদর্শনীতে রাজাকারদের ছবি! বিতর্কের মুখে ব্যবস্থা নিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

টিএসসিতে ছাত্রশিবিরের আয়োজনে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি টাঙানো নিয়ে তীব্র সমালোচনা, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে প্রশাসন সরায় বিতর্কিত ব্যানার

এবিএনএ:  জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে টিএসসির পায়রা চত্বরে তিন দিনব্যাপী একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এই প্রদর্শনীতে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াতের কয়েকজন নেতার ছবি স্থান পায়—যার ফলে ক্যাম্পাসে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যানারটি সরিয়ে নেয়।

মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্কিত ছবিটি ছড়িয়ে পড়তেই একাধিক শিক্ষার্থী এবং প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠন টিএসসিতে এসে প্রতিবাদ জানায়। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম শিবির নেতাদের সাথে কথা বলে ব্যানারটি সরিয়ে নেন।

ছবিতে দেখা যায়, ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের—যেমন নিজামী, কাদের মোল্লা, মুজাহিদ, সাঈদী প্রমুখের ছবি টাঙানো হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছাত্রমৈত্রী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ মুক্তিযুদ্ধপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা।

ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে একাত্তরের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, তারা ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলন চলবে।”

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, “শিবির ২০২৪ সালের ঘটনাকে সামনে এনে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করছে। এটি ঠেকাতেই হবে।”

অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই প্রদর্শনী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তারা প্রশাসনের অনুরোধে ছবি সরিয়ে ফেলেছে।

শিবিরের প্রচার সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন খান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, “একটি মহল বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করছে। বিষয়টি পরিষ্কার করতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের আবেগ ও ক্যাম্পাসের পরিবেশ বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এটি শুধু প্রশাসনিক নয়, আদর্শিক বিষয় বলেও মনে করছে শিক্ষার্থীরা।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও সামনে এসেছে রাজাকারদের পুনর্বাসনের অভিযোগ, এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজনের তীব্রতা। প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা না থাকলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button