বাংলাদেশ

শাহবাগে ছাত্র-জনতার উত্তাল বিক্ষোভ

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে ছাত্র ও জনতার কঠোর আন্দোলন চলছে

এবিএনএ:  ঢাকার শাহবাগ মোড় পরিণত হয়েছে উত্তাল আন্দোলনের কেন্দ্রে। আওয়ামী লীগকে একটি সন্ত্রাসী রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গতকাল বিকেল থেকে শুরু হয়েছে টানা অবরোধ। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও দেশের নানা জায়গা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা যোগ দিয়েছে এই কর্মসূচিতে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শাহবাগে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। গতকাল সন্ধ্যায় এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ শাহবাগে সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেন, প্রজ্ঞাপন ছাড়া তারা অবস্থান ছাড়বেন না। ফেসবুক লাইভে আন্দোলনের সময়সূচি পরবর্তী পদক্ষেপ জানিয়ে দিয়েছেন এনসিপি এবং ইসলামপন্থি দলগুলোর নেতারা।

শাহবাগ ছাড়িয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে পল্টন, উত্তরা, খুলনা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন শহরে। ঢাকার উত্তরায় মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা সরকারবিরোধী স্লোগানে রাজপথ মুখর করে তোলে। চট্টগ্রামের গুলজার মোড়ে, জাবির ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে, খুলনার শিববাড়ি মোড়, লক্ষ্মীপুর নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে চলছে অবরোধ।

সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ গণহত্যা, নিপীড়ন দুর্নীতির জন্য দায়ী এবং এটি রাজনৈতিক দল নয় বরং ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী। এনসিপির নেতা সারজিস আলম বলেন, “শাহবাগেই আওয়ামী লীগের কবর রচনা হবে।” তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র এখন সময়ের দাবি।”

জমায়েতে অংশ নিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, খেলাফত ছাত্র মজলিসসহ বহু রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা। স্লোগানে তারা আওয়াজ তুলেছে, “আওয়ামী লীগ ব্যান করো”, “গণহত্যাকারী দলের বিচার চাই”, “এই বাংলায় খুনি লীগের ঠাঁই নেই।”

শাহবাগ থেকে দেওয়া বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা শাহবাগে থাকব যতক্ষণ না সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।” তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলন শুধু ঢাকায় নয়, সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়বে।”

অন্যদিকে লন্ডন থেকে জনতা পার্টি বাংলাদেশের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন এক ভিডিও বার্তায় এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, দেশে ফিরে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেবেন।

এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সতর্ক করে বলেছেন, “যদি দ্রুত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা না হয়, তবে আবারও ঢাকা মার্চ হবে।” তিনি দাবি করেন, দলমত নির্বিশেষে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে এই আন্দোলনে শরিক হতে হবে।

বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে আন্দোলনের বিভিন্ন ভিডিও বার্তা। আন্দোলনকারীরা ‘আজাদি’ ও ‘জনতার শক্তি’ স্লোগানে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরকে প্রকম্পিত করছে।

এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছিল, তখনও শাহবাগে অবস্থান করে ছাত্র জনতা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

Share this content:

Back to top button