আমেরিকা

হিলারি কেন টিম কেইনকে বেছে নিলেন

এ বি এন এ : ডেমোক্রেট দল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন তার রানিংমেট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছেন ভার্জিনিয়ার সিনেটর টিম কেইনকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে বাইরে, রাজনীতির মাঠে ব্যাপক আলোচনা। সমালোচনাও কম নয়। টিম কেইনকে ‘বোরিং’ ডেমোক্রেট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ, তিনি গর্ভপাতের বিরোধী। তা সত্ত্বেও কেন তাকে বেছে নিলেন হিলারি ক্লিনটন। এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে স্কাই নিউজ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে। সে অনুযায়ী, নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যদি হিলারি ক্লিনটনকে জিততেই হয় তাহলে তাকে ভার্জিনিয়া রাজ্যে জিততেই হবে। এমনটা তার কৌশলী ও তিনি নিজে মনে করেন। কারণ, ভার্জিনিয়া রাজ্যে রয়েছেন বিপুল পরিমাণ স্প্যানিস ভোটার। তাদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সেখানকার জয়কে বেশ বড় করে দেখা হচ্ছে ডেমোক্রেট শিবিরে। এ রাজ্যের সিনেটর, রাজনীতিতে পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি হলেন টিম কেইন। তিনি অনর্গল স্প্যানিস ভাষায় কথা বলতে পারেন। রাজ্যে তার রয়েছে চমৎকার ইমেজ। ফলে তার মাধ্যমে এ রাজ্য জয় করতে চান হিলারি। এ জন্যই তাকে তিনি বেছে নিয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে পর্যায়ক্রমে মেয়র, গভর্নর ও পরে সিনেটর হয়েছেন এমন ২০ জন রাজনীতিকের মধ্যে অন্যতম টিম কেইন। রাজনীতিতে নেমে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কোনদিন পরাজিত হন নি। ২০১২ সালে সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আর্মড সার্ভিসেস, ফরেন রিলেশন্স, বাজেট সংক্রান্ত কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি শুধু হিলারি ক্লিনটনই নন, বিভিন্ন রাজনৈতিক বোদ্ধাদের নজর কেড়েছেন। তবে সমালোচকরা বলেন, তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেয়া হিলারির জন্য খুব চমৎকার কাজ হয় নি। কারণ, তিনি মিট দ্য প্রেসে এক সাক্ষাতকারে নিজেই স্বীকার করেছিলেন, আমি বোরিং (বা বিরক্তিকর)। তিনি ক্যাথোলিক ধর্মমতের বিশ্বাসী। তার বড় বড় নীতির মধ্যে তিনি এ বিশ্বাসকে প্রভাবিত করিয়েছেন। তিনি এর আগে হন্ডুরাসে একটি মিশনারিতে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন সুশীল সমাজের অধিকার রক্ষাকারী হিসেবে। তিনি শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ-ের বিরোধী। তবে মৃত্যুদন্ড তিনি বন্ধ করেন নি তার গভর্নরশিপের সময়। ২০১২ সালে তিনি ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছিলেন, মৃত্যুদ-ের বিরুদ্ধে আমার একটি নৈতিক অবস্থান আছে। কিন্তু মৃত্যুদন্ডকে বহাল রাখা হয় এমন শপথ নিতে হয়েছে দায়িত্ব নেয়ার সময়। তাই বাধ্য হয়ে সেই শপথ অনুসরণ করতে হচ্ছে। তিনি সমর্থন করেন ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিটিপি)। তাই তাকে যেন বেছে না নেন সে জন্য দলের উদারপন্থি অনেকে আহ্বান জানিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটনের প্রতি। টিটিপির সমালোচকরা বলেন, এই চুক্তির ফলে চাকরিখাতে আঘাত আসবে। মার্কিন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যাবে। উল্লেখ্য, টিটিপির বিরোধিতা করেন যেসব মার্কিনি তার মধ্যে রয়েছেন হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পও। টিম কেইনের স্ত্রী অ্যানি হোলটন ভার্জিনিয়া রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। তাদের রয়েছে তিনটি সন্তান। তারা হলো ন্যাট, উডি ও আনিলা। টিম কেইন হলেন একজন ওয়েল্ডারের সন্তান। তার পিতার ছিল কানসাস শহরের উপকণ্ঠে একটি মেটালওয়ার্ক শপ।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button