

এবিএনএ : করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবার প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন। ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ‘ক্যাচমেন্ট (এলাকাভিত্তিক) কোটা’ ৪০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। আর ক্লাস্টারভিত্তিক লটারিতে ঢাকার শিক্ষার্থীরা একটির জায়গায় এবার পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাছাই করার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দীপু মনি এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, “স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াবার জন্য প্রতি শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যোগ্যতার চাইতে ভাগ্যকে প্রাধ্যান্য দেওয়া হচ্ছে।… বাধ্য হয়েই এই পদ্ধতি বেছে নিয়েছি।” অন্যবার প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে এবং দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হত। আর জেএসসি-জেডিসির ফলের ভিত্তিতে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হলেও এবার অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় সে সুযোগ নেই।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “তিনটি বিকল্প খতিয়ে দেখেছি। একটি হচ্ছে স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্কুলে এনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না। এমসিকিউ পদ্ধতির কথা চিন্তা করেছি, কিন্তু তাতেও শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে হত। “অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সবার জন্য নিরাপদ হলেও সব শিক্ষার্থীর অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন হবে, তাই এটি যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি। সবার ইন্টারনেট অ্যাকসেস নেই, আবার সংযোগেও সমস্যা আছে।”
আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভাগ্যের ওপর নির্ভর করতে হবে বলে এবার শিক্ষার্থীদের যোগ্যতার বিষয়টি হয়ত অনেকে ভাববেন যে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটু ভালো করে যদি লক্ষ্য করি, তাহলে বোঝা যাবে যে প্রক্রিয়াটি যোগ্যতাভত্তিক না হয়ে ভাগ্যভিত্তিক হলেও আমাদের বিদ্যালয়গুলো সর্বোপরি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।”
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, “প্রচলিত ব্যবস্থায় কেবল অ্যাকডিমিক অর্থে সব মেধাবী শিক্ষার্থীরা গুটি কয়েক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীভূত হয়, ফলে বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এক ধরনের অসাম্য তৈরি হয়। প্রচলিত ভর্তি প্রক্রিয়া অব্যাহত হলে তা দূর করা অসম্ভব। “একটি দেশের গুণগত শিক্ষা অর্জনে এ ধরনের অসাম্য একটি বড় বাধা।… এই পদ্ধতিতে বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কিছুটা হলেও সাম্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হব।”
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেক সময় স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা হলে স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করা যাবে। “আশা করি পূর্ণ স্বচ্ছতার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারব। অনেক প্রতিষ্ঠান বেশি ভর্তি ফি নেয়। অনেক সময় আমরা ব্যবস্থা নিই, অনেক সময় প্রমাণ না থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারি না। আশা করি কেউ অতিরিক্ত ফি নেবেন না, অতিরিক্ত ফি নিলে ব্যবস্থা নেব, আমরা কঠোর হব।”
বাংলাদেশে করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কওমি মাদ্রাসা বাদে অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে।কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে এবার পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা নেবে না সরকার। আর অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসি ও সমমানের ফলফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে।
Share this:
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window) LinkedIn
- Click to share on Reddit (Opens in new window) Reddit
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window) WhatsApp