লাইফ স্টাইল

শিশুর বুদ্ধি বিকাশে যা করবেন

এবিএনএ : শিশুরা একটু দুরন্তই হয়। সারা দিন ছুটোছুটি করে মাতিয়ে রাখে সবাইকে। এক জায়গায় তাকে বই নিয়ে বসিয়ে রাখা মুশকিল। কিছুতেই পড়তে চায় না। লেখা-পড়া করতে বললেই নানা বায়না জুড়ে দেয়। কখনো কখনো শিশুর চঞ্চল আচরণ আপনাকে অস্থির করে তোলে, চিন্তায় ফেলে দেয়। আপনার মনে নানা প্রশ্ন আসে শিশুর সঠিক বুদ্ধির বিকাশ হচ্ছে তো?
ছোট শিশু একটু দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে তার বেড়ে ওঠার পাশাপাশি বুদ্ধির বিকাশও জরুরি। আর এর জন্য শিশুর খাবার-দাবারের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে।
এমন কিছু খাবার আছে যা শিশুর মস্তিষ্ক সক্রিয় ও সতেজ রাখে। আর মস্তিষ্ক সক্রিয় এবং সতেজ থাকলে শিশুর মেধা ও বুদ্ধি বিকাশ হয়।
শিশুর মেধা বিকাশে সহায়ক এমন কিছু খাবার সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সাখাওয়াত আলম।
মায়ের দুধ: শিশুকে অন্তত দুই বছর বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। কারণ মায়ের দুধ পান করলে শিশুর বুদ্ধিমত্তা বাড়ে।
ডিম: ডিমে রয়েছে প্রচুর আয়রন। যা লোহিত কণিকা তৈরি করে রক্তের উপাদানে সঠিক মাত্রা বজায় রাখে। এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। যা চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা যায়, যারা প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খায় তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যদের তুলনায় অন্তত ৭০% বেশি ভালো থাকে।
আখরোট: আখরোটে অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এটি শিশুসহ সব বয়সীদেরই মস্তিষ্কের যে কোনো রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
বাদাম: শিশুকে প্রতিদিন বাদাম খেতে দিন। কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, চীনাবাদামসহ যে কোনো ধরনের বাদামই শিশুর মানসিক বৃদ্ধিতে সহায়ক। কারণ বাদামে রয়েছে ভিটামিন ‘ই’ যা মস্তিষ্কের সমন্বয় সাধনের ক্ষমতা বাড়ায়।
ব্লু বেরি: বুদ্ধি বিকাশে ব্লু বেরির জুড়ি নেই। এতে আছে ফ্ল্যাভোনয়েডস। তাই ব্লু বেরিকে ব্রেইনের জন্য সবচেয়ে কার্যকর খাবার বলে ধরা হয়।
ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে থাকে ৭৫% কোকো যা শিশুর মেধা ও বুদ্ধি বিকাশের জন্য উপকারী। ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কে নিউরন তৈরি করে যা নতুন বিষয় মনে রাখতে সাহায্য করে।
শাকসবজি: শাকসবজিও শিশুর মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। পাতা কপি ও পালং শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ‘কে’ এবং বিটা ক্যারোটিন। যা শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। পুষ্টিগুণে গুণান্বিত টমেটো। এটি মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
সামুদ্রিক মাছ: মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সামুদ্রিক মাছ বেশ উপকারী। মস্তিষ্কে থাকা ফ্যাটি এসিডের ৪০% হচ্ছে ডিএইচএ, যা সামুদ্রিক ও মাছের তেলে পাওয়া যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড হিসেবে। তাই শিশুর বয়স এবং দেহের গঠন অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ ও মাছের তেল সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন খাওয়াতে হবে।
বিভিন্ন ফল: শিশুর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন জাম, লিচু, স্ট্রবেরি বা আঙ্গুরের মতো ফলগুলো। কারণ এ ফলগুলোতে রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট যা ব্রেইনের কোষের অক্সিডেশন এবং ক্রমাগত ক্ষয়ে যাওয়া রোধ করে ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
এছাড়াও, গম, আমলকী, পেঁয়াজ, কালোজিরা, আপেল, কুমড়ো বীজ, মধু, খেঁজুর ও বীট শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button