আমেরিকালিড নিউজ

‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞার’ অবসান ঘটালেন বাইডেন

এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রে ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞার অবসান’ ঘটিয়েছেন দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরুর প্রথমেই তিনি এক কার্যনির্বাহী আদেশে এ সংক্রান্ত নথিতে স্বাক্ষর করেন।

গতকাল বুধবার শপথের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হোয়াইট হাউসে নিজের দাপ্তরিক কাজ শুরু করেন বাইডেন। চেয়ারে বসেই তিনি সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি নীতি এক কার্যনির্বাহী আদেশে বাতিল করে দেন।

এছাড়া পার্লামেন্ট ক্যাপিটলে তিনটি নথিতে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এর মধ্যে অভিষেক দিবস ঘোষণাসংক্রান্ত নথিতে প্রথম স্বাক্ষর করেন। বাকি দুটি নথি মন্ত্রিসভার সদস্যদের মনোনয়ন বিষয়ে। এরপর আরও ১৫টি কার্যনির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন। আদেশগুলোর মধ্যে- ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত, অভিবাসন সংক্রান্ত নীতিমালা, মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহে ট্রাম্পের দেওয়া জরুরি ঘোষণা বাতিল অন্যতম।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দ্রুত কাজে বসার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাইডেন। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার আগে এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘যখন আমাদের মুখোমুখি সংকট মোকাবিলার সময় আসে, তখন নষ্ট করার মতো কোনো সময় নেই।’

প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মক্ষেত্রে এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় সমতা দাবি করার আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিজীবীদের জন্য এবং ফেডারেল ভবন ও হোয়াইট হাউসে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নতুন অফিসে মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।

বাইডেন বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে আমরা অতিরিক্ত নির্বাহী পদক্ষেপের ঘোষণা দেব। আমেরিকার জনগণের কাছে একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া তা রক্ষা করতে হবে।’

গতকাল নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মার্কিন সংসদ ভবনের সামনে শপথ নিয়েছেন বাইডেন ও কমলা। ঠিক দুই সপ্তাহ আগে তার পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা এই ক্যাপিটলেই সশস্ত্র দাঙ্গা বাঁধিয়েছিল। আর এ কারণে ক্যাপিটল ভবনের চারধারে এত বেশি সেনা ও নিরাপত্তাকর্মী নামানো হয়েছিল যে, স্থানীয়রা একে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ বলে অভিহিত করেন।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮৯৩ সালের পারিবারিক বাইবেল ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন বাইডেন। প্রথা মেনে শপথে তিনি বলেন, ‘আমি শপথ করছি যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করব। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব।’

শপথ পরবর্তী প্রথম বক্তৃতায় বাইডেন বিদ্বেষ-বিভাজন ভুলে গিয়ে ভালোবাসা ও ঐক্য গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে ঐক্যই সফল হওয়ার একমাত্র পথ। তিনি বলেন, আমাদের জন্য এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, বিশেষত সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়। তিনি স্বীকার করে নেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিভাজনের যে দেয়াল গড়ে উঠেছে সমাজের পরতে পরতে- এর শেকড় গভীরে এবং এটা অবাস্তব কিছু নয়, নতুনও নয়। কিন্তু তিনি মনে করেন, ‘ঐক্যই সামনে আগানোর উপায়।’

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button