লাইফ স্টাইললিড নিউজ

প্রাথমিক চিকিৎসার প্রাথমিক ধারনা, যা থাকা উচিত একটি ফার্স্ট এইড ব্যাগে

দুর্ঘটনা কারও জীবনেই বলেকয়ে আসে না। আমাদেরকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হয়। এই প্রস্তুতির আরেক নাম হচ্ছে ফার্স্ট এইড কিট। আমরা এই নাম অনেকবার শুনলেও অনেকেই জানি না আসলে এই কিটে কী কী রাখলে সত্যিকার অর্থেই দুর্ঘটনার সময়ে আমরা সাহায্য পাবো বা আমাদের গুরুত্বের লিস্টটি কেমন হওয়া উচিত।

আজকের আলোচনার বিষয়, এই ফার্স্ট এইড কিট বা প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাগ। একটি ব্যাগে আসলেই কী কী রাখা উচিত এবং কেন। চলুন তবে শুরু করা যাক।

ঘরের এবং ভ্রমণের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাগ

প্রথমত জানতে হবে আপনি ঘরে থাকা অবস্থায় সর্বোচ্চ কী কী হতে পারে। হ্যাঁ, শুনতে একটু আজব শোনালেও এই ধারনা না থাকলে আপনি কখনোই ফার্স্ট এইড কিট গোছাতে পারবেন না। যা যা ঘটতে পারে তা হলো-

  • পুড়ে যাওয়া
  • কেটে যাওয়া
  • ছড়ে যাওয়া
  • পোকা লাগা
  • কাঁচ বা কাঠের ছোটো টুকরা গেঁথে যাওয়া
  • মাংসপেশিতে টান লাগা
  • মচকে যাওয়া
  • জ্বর
  • নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • কাশি
  • গলা ব্যথা
  • অ্যালার্জি
  • ফুসকুড়ি ওঠা
  • হালকা কোনো ব্যথা

এবার তাহলে আপনার হাতে একটি ছোটোখাটো তালিকা চলে এসেছে যে ঘরে থাকা বা ভ্রমণ করা অবস্থায় কী কী কারণে আপনাকে ফার্স্ট এইড কিটের শরণাপন্ন হতে হবে। এবার তাহলে চলুন গুছিয়ে নেয়া যাক প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিস

১. ৪ ইঞ্চি X ৪ ইঞ্চি গজ ব্যান্ডেজ, যে কোনো ফার্মেসিতে পাওয়া যাবে। এটি সাদা এক ধরনের জালবুননের মতো কাপড়। কেটে যাওয়া বা যে কোনো জায়গায় জীবাণুর আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহৃত হয়।

২. ব্যাকটিন স্প্রে বা ক্যালামাইন লোশন, এটি তাৎক্ষনিক ভাবে পোকার কামড়ে চুলকানো থেকে স্বস্তি দেবে।

৩. ২, ৩ এবং ৪ ইঞ্চি এইস ব্যান্ডেজ, মচকে গেলে বা কোথাও মাংসপেশিতে টান লাগলে এই ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা হয়।

৪. সব ধরনের অ্যাডহেসিভ ব্যান্ডেজ, ছোটোখাটো কাটায় ওষুধ লাগিয়ে সেখানে ব্যান্ডেজ দিয়ে আটকে দেয়া হয়।

৫. ডাইফেনহাইড্রামিন ওষুধ, অ্যালার্জি কমাতে এই ওষুধ গ্রহণ করা যায়।

৬. গ্লাভস, কারও কাটা বা পোড়ার পরিমাণ বেশি হলে হাতে গ্লাভস পরে চিকিৎসা দেয়া ভালো। তাছাড়া গ্লাভস এ পানি ভরে ফ্রিজে রাখলে সেটা আইস ব্যাগ হিসাবে কাজ করবে।

৭. পলিস্পরিন অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম, হালকা কেটেছড়ে যাওয়া জায়গায় লাগানো যাবে। সামান্য ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থাকলে তা দূর হয়ে যাবে।

৮. পকেট মাস্ক, সিপিআর দেবার জন্য ব্যবহার করা যায়।

৯. সেফটি পিন, সব আকারের। কাঁটা বা কাঁচ ও কাঠের ছোটো টুকরা গেঁথে গেলে তা বের করার জন্য আগুনে হালকা গরম করে ব্যবহার করা যায়।

১০. কাঁচি (ছোটো)।

১১. চিমটা, সেফটি পিনের মত একই কাজে ব্যবহৃত। যদি বাহির থেকেই সেটি ধরা সম্ভব হয় তাহলে চিমটা দিয়ে ধরে অনাকাঙ্ক্ষিত টুকরা বের করা যায়।

১২. কোনো চিকিৎসা চলতে থাকলে সেই প্রেসক্রিপশন এবং সাথে করে আকস্মিক কোনো অসুস্থতা বা ইত্যাদি হবার সম্ভাবনা সাথে করে লিখে রাখা।

১৩. সাধারণ কিছু ওষুধ, যেমনঃ প্যারাসিট্যামল, আইবুপ্রোফেন, ডাইক্লোফেনাক, অ্যাস্পিরিন, রাবিং বাম, স্যালাইন ইত্যাদি সাথে রাখুন।

১৪. ছোটো রুমাল, বড় কোনো কাটায় রক্ত বন্ধ করার জন্য চেপে ধরতে বা জ্বরে পানিপট্টি দিতে সাহায্য করবে।

১৫. হেক্সাসল বা জীবাণুমুক্ত করে এমন সল্যুশন। কাঁচি, সেফটি পিন বা যে কোনো বস্তু ব্যবহার করার আগে একবার হেক্সাসল দিয়ে মুছে নিলে তা পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে। কেটে যাওয়া স্থানে ব্যান্ডেজ করবার আগেও এই সল্যুশন দিয়ে জায়গাটি একবার মুছে নিতে পারেন।

১৬. যেসব ওষুধ সম্পর্কে আপনার নিশ্চিত ধারনা আছে তার একটি তালিকা সঙ্গে রাখতে পারেন। আশেপাশে ডাক্তার না পাওয়া গেলে আপাতত আপনিই হতে পারেন ‘লাইফ সেভার’।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button