জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

জন্মাষ্টমীতে ঢাকায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

এ বি এন এ : জাঁকজমকভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে আজ বৃহস্পতিবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র জন্মতিথি বা জন্মাষ্টমী উদ্‌যাপন করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। এ উপলক্ষে বিকেলে ঢাকায় বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে হাজারো মানুষ অংশ নেন।

আজ বেলা তিনটায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে এই শোভাযাত্রা বের হয়। পলাশী হয়ে শহীদ মিনার, হাইকোর্টের সামনে দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবন এবং গোলাপ শাহ মাজার গুলিস্তান হয়ে নবাবপুরে গিয়ে বাহাদুর শাহ পার্কে শেষ হয়।

পলাশীর মোড়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। শোভাযাত্রার উদ্বোধক ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।

মহানগর সর্বজনীন পূজা উদ্‌যাপন কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রায় হিন্দুধর্মাবলম্বীরা বিচিত্র সাজে অংশ নেন। নারী-পুরুষ, শিশু থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ এতে অংশ নেন। হাতি, ঘোড়া, ট্রাকে, হেঁটে যে যেভাবে পারেন শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। তাঁরা নেচে-গেয়ে বাদ্য বাজিয়ে শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন পালন করেন।

জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের একজন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিটু চন্দ্র বলেন, শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে তাঁর। শিশুকন্যাকে কাঁধে নিয়ে শোভাযাত্রায় যোগ দেন পুরান ঢাকার রনি দাস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে অসাম্প্রদায়িক দেশ—শান্তিপূর্ণ এই শোভাযাত্রাই সেটা প্রমাণ করে।

হিন্দু পুরাণমতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়-নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল।
দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ ছিল সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশে হাজার বছরের ঐক্যবোধের চেতনা ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে ঈদ, জন্মাষ্টমী বুদ্ধপূর্ণিমা ও বড়দিন সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা মনে করি, এ ধরনের জাতীয় উৎসব জাতীয় ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করবে।’

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button