জাতীয়

মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে দৃঢ় অবস্থান: প্রধান উপদেষ্টার বার্তা জুলাই বিপ্লব স্মরণে

জুলাইয়ের সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়ীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের; জাতিসংঘ ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

এবিএনএ: গত বছরের জুলাইয়ে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ স্মরণানুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ন্যায়বিচার মানে শুধু শাস্তি নয়—ন্যায়বিচার মানে এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা নিশ্চিত করা, যেখানে জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রক্ষমতা কখনোই ব্যবহার হবে না।”


🗓️ ‘জুলাই বিপ্লব’-এর স্মরণে এক প্রতিশ্রুতিশীল বার্তা

‘জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকী’ উপলক্ষে জাতিসংঘ ঢাকা কার্যালয়ের আয়োজনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ইউনূস বলেন, “গত বছর এই সময় দেশের হাজার হাজার মানুষ—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম—ন্যায়বিচার ও সম্মানজনক ভবিষ্যতের জন্য রাস্তায় নেমেছিল। তাদের ত্যাগ গোটা জাতির গর্ব।”


🕊️ জাতিসংঘের ভূমিকার প্রশংসা

ড. ইউনূস বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা সংকট কিংবা গত বছরের সংকটকালেও জাতিসংঘ আমাদের পাশে ছিল। জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের দপ্তরের সহযোগিতায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব হয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই থেকে আগস্ট ২০২৪-এর মধ্যে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হয়, যা ছিল পরিকল্পিত ও কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত সহিংসতা


⚖️ বিচারের দাবি ও চলমান পদক্ষেপ

ড. ইউনূস বলেন, “এই সহিংসতা শুধুমাত্র নিন্দনীয় নয়, বরং তা মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। জাতিসংঘের সুপারিশমালার আলোকে আমরা ইতিমধ্যে গুম বিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশন, দণ্ডবিধির সংশোধন এবং জাতিসংঘের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি।”

তিনি জানান, ঢাকায় গঠিতব্য সহায়তাকারী মিশন সরকার ও সুশীল সমাজকে কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেবে।


🗳️ একটি নতুন রাজনৈতিক দিগন্তের প্রত্যাশা

অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর জাতীয় ঐকমত্য গঠনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে প্রত্যেক মানুষ শান্তি, মর্যাদা ও স্বাধীনতার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।”


🔚 ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়

শেষে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যারা এই স্বপ্নের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের আত্মত্যাগ একটি নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি করেছে—যেখানে মানবাধিকার, ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্র অটল থাকবে।”

এই প্রতিশ্রুতি শুধু রাষ্ট্রীয় ভাষণে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাস্তবায়নের দিকেও এগোচ্ছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button