আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

শান্তির পথ বেছে নিতে সু চিকে ইউনূসের আহ্বান

এবিএনএ : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চিকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় দৈনিক দ্য ন্যাশনালে রোহিঙ্গাদের নিপীড়ন নিয়ে ইউনূসের প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনিও চট্টগ্রামে বেড়ে উঠেছেন। সে কারণে অনেক মানবিক ট্র্যাজেডি তিনি নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন। হাজার হাজার অসহায়, বিধ্বস্ত পুরুষ, নারী ও শিশুকে শরণার্থী হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে দেখেছেন তিনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস লিখেছেন, তাদের অনেকেই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচারের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেকেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। প্রতিদিন নাফ নদীতে ভেসে উঠছে নারী ও শিশুর মরদেহ। বেশিরভাগই ছোট নৌকায় করে সপরিবারে নদী পার হতে গিয়ে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারাচ্ছেন।

‘রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না দিতে মিয়ানমার সরকার যে যুক্তি ব্যবহার করছে তা হাস্যকর। ঐতিহাসিকভাবে বর্তমানের রাখাইন প্রদেশ আরাকান রাজ্য নামে পরিচিত। এক সময় আরাকান রাজ্য অার বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম একই অঞ্চল ছিল।

কিন্তু পরে এসে আরাকান রাজ্য ব্রিটিশ ভারতের অংশ হয়ে পড়ে। ব্রিটিশরা চলে গেলে ১৯৪৮ সালে আরাকান রাজ্য মিয়ানমারের অংশ হয়ে যায়। সেই হিসেবে রোহিঙ্গারাও তাদের দেশের নাগরিক। অথচ রোহিঙ্গারা শত শত বছর ধরে রাখাইনে বসবাস করেও কোনো রকম চিকিৎসা সেবা তো পাচ্ছে না; শিক্ষা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গত দুই সপ্তাহের নৃশংস নিপীড়নের শিকার দুই লাখ ৯০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কিছু তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর ওই ক্লিয়ারেন্স অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী।

গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে নিষ্পাপ রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বরতা দ্রুত থামানোর আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।

দিনের পর দিন এই নৃশংসতার মাত্রা আরও বাড়ছে। সঙ্কট সমাধানের তেমন রাস্তাও আপাত দেখছেন না তিনি। সে কারণে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘকে দ্রুত যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button