আন্তর্জাতিক

জয়ললিতার শোকে ৭৭ জনের মৃত্যু

এবিএনএ : ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং ‘আম্মা’ খ্যাত জনপ্রিয় নেত্রী জয়ললিতার অসুস্থতা এবং মৃত্যুর ঘটনায় শোকে ও কষ্টে রাজ্যটির বিভিন্ন স্থানে ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জয়ললিতার দল সর্বভারতীয় আন্না দ্রাবিড় মুনেত্র কড়গম (এআইডিএমকে) বুধবার (০৭ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত ৭৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এছাড়া জয়ললিতার ৩০ জন ভক্ত-সমথর্ক আত্মহত্যা চেষ্টা করেছেন বলে জানায় দেশটির সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স।

যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও গভীর শোক প্রকাশ করে এআইডিএমকে প্রত্যেক পরিবারে ৩ লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর যারা আহত বা আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে তাদেরকে ৫০ হাজার রুপি দেওয়া হবে।

শুধু তামিলনাড়ুতে নয়, প্রভাবশালী রাজনীতিক ও এক সময়ের শক্তিশালী অভিনেত্রী জয়ললিতার মৃত্যুতে গোটা ভারত শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। স্বয়ং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জয়ললিতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, তার মৃত্যুতে ভারতের রাজনীতিতে বিশাল শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। গত ০৫ ডিসেম্বর (সোমবার) স্থানীয় সময় দিনগত রাত ১১টা ৩০ মিনিটে তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

পানিশূন্যতা ও জ্বরে আক্রান্ত হলে গত ২২ সেপ্টেম্বর জয়ললিতাকে অ্যাপোলোতে ভর্তি করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি স্বাভাবিক খাবার খেয়েছেন। ২৯ সেপ্টেম্বর এক বুলেটিনে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসায় ভালোভাবে সাড়া দিচ্ছেন এবং কয়েকদিনের মধ্যে তিনি সেরে উঠবেন।

৩ নভেম্বর অ্যাপোলো জানায়, জয়ললিতা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর ১০ দিন পর ১৩ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী এক চিঠি দিয়ে জানান তিনি কর্মস্থলে ফিরতে চান। ১৯ নভেম্বর তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ৪ ডিসেম্বর আসে জয়ললিতার হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরের দিন তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।

উল্লেখ্য, ৬৮ বছর বয়সী জয়ললিতা এআইএডিএমকের মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতিতে পদার্পণের আগে ১৯৬১ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তামিল, তেলুগু ও কান্নাডা মিলিয়ে প্রায় ১৪০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। নৃত্যে নজরকাড়া এ অভিনেত্রীকে তার অভিনয়দক্ষতার জন্য ‘কুইন অব তামিল সিনেমা’ নামেও ডাকা হতো।

তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬, ২০০২ থেকে ২০০৬ এবং ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেন। মাঝে একটি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হলেও তাতে খালাস পেয়ে ২০১৫ সালে আবারও দক্ষিণের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ রাজ্যটির সর্বোচ্চ অধিকর্তার আসনে বসেন। রূপালি অঙ্গনে জয়া নামে পরিচিত জয়রাম জয়ললিতা রাজনীতিতে নামার পর উপাধি পান পুরাচ্চি থালাইভি অর্থাৎ বিপ্লবী নেত্রী নামে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button