এবিএনএ: প্রাইভেট কার চালান মামুন শেখ। আগস্টের শুরুতে চাকরিদাতার ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে আসার সময় সুযোগ বুঝে উল্টো পথে চালিয়ে আসেন। পুলিশ দেখেনি, তাই পার পেয়ে গেছেন বলে ধারণা ছিল তার। তিন দিন পর চাকরিদাতা তাকে জানায়, উল্টোপথে চলা যাবে না। মামুন অবাক হন, এই তথ্য তিনি কীভাবে জানলেন। মামুন বলেন, ‘মালিক জানায় একটি মামলার কাগজ এসেছে। পরে বুঝতে পারি উল্টো পথে আসার কারণে এই মামলা হয়েছে। তখনই মালিক নিষেধ করে দিছে উল্টো পথে গাড়ি না চালাতে।’ মামুনের মতো এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষের। এরা সড়কে আইন অমান্য করার পর বাড়িতে ফিরে মামলার কাগজ পেয়েছেন। পুলিশ বলছে, সড়কে আইন লংঘনের পর পুলিশ দেখেনি বলে পার পাওয়ার দিন আর নেই। কারণ, চারপাশে থাকা ভিডিও ক্যামেরায় ধরা পড়া রেকর্ড দেখে ঠিকেই মামলা ঠুকে দিচ্ছেন তারা। আর কাগজ পৌঁছে যাচ্ছে বাড়িতে। বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে পার পাওয়া যাবে না, চালকরা যখন এটা উপলব্ধি করবেন, তখন সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের হিসাব বলছে, গত দেড় বছরে উল্টোপথে চলা, ফুটপাতে গাড়ি নিয়ে উঠাসহ ট্রাফিক আইন লংঘনের ভিডিও দেখে প্রায় ৯৯ হাজার মামলা দেওয়া হয়েছে। পরে মামলার রশিদ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মালিকের ঠিকানায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) কাজী মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, ‘ডিএমপির ট্রাফিক দক্ষিণ জোনে তিনটি টিম কাজ করে। যারা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে যেখানে গাড়ি রং পার্কি আছে বা যত্রতত্র পাকিং করে রাখা আছে সেটা ভিডিও করে রাখে। পরে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে বিআরটিএতে যোগাযোগ করে সেখান থেকে গাড়ির মালিকের বিস্তারিত এনে মামলা করি। পরে মালিককে চিঠি দেই নির্ধারিত তারিখে অফিসে এসে মামলা মোকাবেলা করতে।’ মালিক না পাওয়া গেলে মামলা কীভাবে হয় জানতে চাওয়া হলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মালিক পাওয়া যায় সব সময়। তবে অনেক বাড়ির ঠিকানা পরিবর্তন করে। এমন ক্ষেত্রে সেসব মামলার কাগজ ফেরত চলে আসে। এসব ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করি গাড়ির মালিকের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে যোগাযোগ করার। তা না হলে বিআরটিএ থেকে চেষ্টা করে সঠিক ঠিকানা জোগাড় করা হয়।’ ভিডিও করার কারণ হিসেবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘অবৈধ পাকিং করার পরও অনেকে অস্বীকার করেন, আবার অনেকে দেখতে চান। এ জন্য প্রমাণ রাখতে সেটা করা হয়। অনেক সময় গাড়ি অপরাধ করে চলে গেলেও ভিডিও প্রজেক্টটা কাজে লাগে। আমরা চেষ্টা করছি, জনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার এবং যেখানে সেখানে পার্কিং না করে জন ভোগান্তি দূর করার।’
ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের গণসংযোগ শাখার মিনহাজুল হোসেন খান জানান, ‘বিশেষ করে উল্টা পথে গাড়ি চলাচল ও যেসব জায়গায় পার্কিং প্লেস না সেখানে পাকিং করলেই ভিডিও করা হয়। পরে সেসব ভিডিও দেখে মামলা করা হয়। প্রতিমাসে প্রায় তিন হাজারের বেশি মামলা হয়ে থাকে।’পুলিশ বলছে, বাসের চেয়ে বেশি উল্টো দিকে বেশি চলে মোটরসাইকেল বা প্রাইভেট কার। তবে বাসগুলো যেখানে সেখানে থামিয়ে যাত্রী উঠা নামা করে। এসবের জন্যও তাদের অনেক সময় মামলা দেওয়া হয়।
প্রচার চালাবে পুলিশ
ভিডিও দেখে মামলার বিষয়টি ব্যাপক প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘ভিডিও মামলাটি নতুন প্রযুক্তি। এটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি কীভাবে প্রচার প্রচারণা করে জনপ্রিয় করা যায়।’ ‘বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, চালক এক জায়গায় গাড়ি রেখে চলে গেছে সেখানে যানজট হচ্ছে। এসময় হুট করে সেখানে পৌঁছে মামলা করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে ভিডিও প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা পরে চালক বা মালিকদের নোটিশের মাধ্যমে ডেকে সমাধান দিচ্ছি।’ চালকরা সচেতন হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সচেতন তো তারা হচ্ছেই। চালকরা ধরে নিচ্ছে নিজের অজান্তেই যদি উল্টাপাল্টা গাড়ি রাখেন তাহলে মামলা হয়ে যেতে পারে।’
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.