এবিএনএ: যে কোনো পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, চাল, ডাল, মাছ, মুরগি, সবজির আমদানি ও উৎপাদনে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। আবাদযোগ্য এক ইঞ্চি জায়গাও যাতে অনাবাদি না থাকে নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে সরেজমিনে তদারক করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে কৃষি, গ্রামীণ কল্যাণমুখী প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে এ মুহূর্তে আয়েশি ও বড় প্রকল্প না নেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্প যাচাই-বাছাইকালে এ সব বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য পরিকল্পনা কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা, বিদেশি ঋণ ৩২২কোটি। বাকি ২৬৭ কোটি টাকা বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব। এর বাইরে দুটি প্রকল্পের চতুর্থ ও পঞ্চম দফা ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি একনেককে অবহিত করা হয়। ব্যয় বৃদ্ধির প্রয়োজন না হওয়ায় প্রকল্প দুটির নতুন করে অনুমোদন প্রয়োজন হয়নি।
পরিকল্পনা মন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, মৎস্য ও প্রাণিসস্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম; ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবগণ একনেক সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য নির্দেশনার বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ডেঙ্গু থেকে সচেতন থাকতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, সিটি করপোরেশন, এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং সাধারণ জনগণকে সচেতন থাকার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।। তিনি বলেছেন, আমরা করোনা পরিস্থিতি আয়ত্তে এনেছি। এখন ডেঙ্গুর বিষয়ে অনেক বেশি সর্তক হতে হবে। এছাড়া এ মুহূর্তে অফিস কিংবা বাসা- কোথাও বিলাসদ্রব্য ব্যবহার না করার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
একনেক বৈঠকে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে সার্বিক অর্থনীতির রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমরা উন্নয়ন উল্লম্ফনের মধ্যে ছিলাম। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে উন্নয়নের সেই গতি ধারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো উন্নয়নের প্রবৃদ্ধির মধ্যেই আছি আমরা।
খাদ্য পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যেই নতুন ধান উঠবে। তখন পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। আন্তর্জাতিকভাবে পরিস্থিতি খারাপ হলেও কৃষি যদি ঠিক থাকে আমরা খেয়ে চলতে পারব।এ সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, বিদেশি মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। এখনো চার মাসের আমদানি দায় মেটানোর মতো রিজার্ভ হাতে রয়েছে।
কেন রিজার্ভ কমছে- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের কারণে রিজার্ভ কিছু কম। আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের নীতি হচ্ছে, আমদানি কমানো এবং রপ্তানি বাড়ানো। এ নীতি কাজে দিয়েছে। গত প্রান্তিকে আমদানি কমেছে আগের একই সময়ের চেয়ে দুই বিলিয়ন ডলারের মতো। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স গত চার মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে।
অনুমোদিত ৭ প্রকল্প
মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। নতুন এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পূর্ত বিভাগ। চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দীপ, কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ ও টেকনাফ অংশের জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় অঞ্চল-২ ও অঞ্চল-৪ এর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামোসহ অঞ্চল-২ অঞ্চল-৫ এর সার্ভিস প্যাসেজগুলোর উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬৩ কোটি টাকা। অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্ত করণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৬২ কোটি টাকা। নবীনগর-আশুগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৩ কোটি টাকা।
দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ প্রকল্পে ৫০২ কোটি টাকা ব্যয় অনুমোদন করেছে একনেক। এছাড়া নুতন করে ব্যয় না বাড়িয়ে চতুর্থবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্ত করণ প্রকল্প এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন ও খুলনা পুলিশ লাইন নির্মাণ প্রকল্প।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা কমিশন সচিব মামুন-আল-রশীদ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য সরকারের সচিব ড. কাউসার আহাম্মদ, আর্থ-সামাজিক বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম; কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এ কে এম ফজলুল হক, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সরকারের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার, আইএমইডি সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান, তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন ও শিল্প শক্তি বিভাগের সচিব ড. এমদান উল্লাহ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.