এবিএনএ: মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে বাদ রেখেই শুরু হয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার নেতাদের সংগঠন আসিয়ানের বার্ষিক সম্মেলন। এতে মিয়ানমারের অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তেমন কেউ উপস্থিত হননি। ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার উদ্বোধনী অধিবেশনে আসিয়ান চেয়ার ব্রুনাই অথবা এই ব্লকের মহাসচিব- কেউই মিয়ানমারের অনুপস্থিতির বিষয়টি উল্লেখ করেননি। দেশের ভিতরে সৃষ্ট সহিংসতার প্রেক্ষিতে সামরিক জান্তার সামনে একটি আঞ্চলিক শান্তি চুক্তি উপস্থাপন করেছিল আসিয়ান। তা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। জান্তা সরকার তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হওয়ার কারণে আসিয়ান নেতারা ওই সরকারকে তাদের সম্মেলন থেকে বাদ রেখেছে। এটা সামরিক জান্তা মিন অং হ্লাইংয়ের জন্য সবচেয়ে প্রচ- চপেটাঘাত।
আসিয়ানের সদস্য হলো ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। এর আগে মিয়ানমারে যখন সামরিক শাসন ছিল, তখন ১৯৯৭ সালে সেই সামরিক সরকারের অধীনে আসিয়ানে যোগ দেয় দেশটি। বার্তা সংস্থা এপি’কে দু’জন কূটনীতিক জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবারের সম্মেলনে অরাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে মিয়ানমারের বর্ষীয়ান উচ্চ পদস্থ কূটনীতিক চ্যান আই-ই’কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ব্রুনাই। কিন্তু তিনি তাতে যোগ দেননি। ওদিকে তিনদিনের এই সম্মেলনে সামরিক জান্তাকে আমন্ত্রণ না জানানো অথবা তাকে এড়িয়ে সম্মেলন করার আসিয়ান সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রতিশ্রুতি নিয়েছে সামরিক বাহিনী। বলেছে, ব্রুনাইকে তারা জানিয়ে দিয়েছে যে, মিন অং হ্লাইং অথবা মন্ত্রী পর্যায়ের কোন প্রতিনিধি ছাড়া মিয়ানমারের প্রতিনিধি হিসেবে তারা কাউকে মেনে নেবে না।
পক্ষান্তরে মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সম্মেলন থেকে বাইরে রাখার জন্য শত্রুতা বন্ধে ব্যর্থতা, আলোচনা শুরুতে ব্যর্থতা, মানবিক সমর্থনে অনুমোদনে ব্যর্থতা এবং মিয়ানমারে একজন বিশেষ দূতের প্রবেশের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করায় ব্যর্থতাকে তুলে ধরেছে আসিয়ান। উল্লেখ্য, ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সুচি ও তার সরকারের যেসব নেতাকে ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে আটক করে রেখেছে সামরিক জান্তা, তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য মিয়ানমারে একজন বিশেষ দূত পাঠানোর অনুমতি চেয়েছিল আসিয়ান । ওই দূত হলেন ব্রুনেইয়ের সেকেন্ড পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরিওয়ান ইউসুফ। কিন্তু আসিয়ানের সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে সামরিক জান্তা।
মিয়ানমারে বিরোধীরা গঠন করেছে সমান্তরাল সরকার। এর নাম দেয়া হয়েছে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)। তারা আসিয়ান এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে স্বীকৃতি দাবি করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো স্বীকৃতি পায়নি। এরই মধ্যে ২৫ শে অক্টোবর এনইউজির দু’জন প্রতিনিধির সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি সাক্ষাত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। সোমবার এ ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জ্যাক সুলিভান বলেছেন, মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলনে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। এ সময় তিনি সেখানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন। সামরিক বাহিনীর নৃশংস সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন সুলিভান। বলেন, অভ্যুত্থানের কারণে অব্যাহতভাবে জবাবদিহিতা চাইবে যুক্তরাষ্ট্র।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অলটারনেটিভ আসিয়ান নেটওয়ার্ক অন বার্মা’র প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়কারী ডেবি স্টোটহার্ড বলেছেন, আসিয়ান সম্মেলনে আমন্ত্রণ না জানানো নিশ্চয়ই মিয়ানমারের সামরিক জান্তার জন্য হতাশার। মিয়ানমারের উত্তরে অত্যাসন্ন যে অপরাধ ঘটছে তা নিয়ে আসিয়ানের উদ্বেগ- বড় ভূমিকা রেখেছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে পশ্চিমের রাজ্য রাখাইনে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে দমনপীড়ন চালিয়েছে সেনাবাহিনী তা নজিরবিহীন। এর ফলে কমপক্ষে ৭ লাখ মানুষ পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.