এ বি এন এ : বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পঞ্চম নিরাপত্তা সংলাপ শুরু হয়েছে।
সূত্র জানায়, নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমন, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সার্বিক নিরাপত্তা ইস্যু এই সংলাপে স্থান পাবে। পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাও প্রাধান্য পাবে।
সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব কামরুল আহসান। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি উইলিয়াম জি পি মোনাহান দেশটির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মার্কিন প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বেশ কয়েকজন বেসামরিক কর্মকর্তা ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এবারের ‘নিরাপত্তা সংলাপে’ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা, বঙ্গোপসাগরে নিরাপত্তা, সামরিক সহযোগিতা, মানব পাচার প্রতিরোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে জোর দেবে বাংলাদেশ। এ ছাড়াও সংলাপে কৌশলগত স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে প্রতি বছর বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। নিরাপত্তা সংলাপ সামনে রেখে ইতোমধ্যে কয়েকবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সর্বশেষ গত বুধবার নিরাপত্তা সংলাপের প্রস্তুতি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা অংশ নেন। একাধিক বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সংলাপের সিদ্ধান্তের অগ্রগতি এবারের নিরাপত্তা সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যেসব বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়া হবে, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
জঙ্গি ও সহিংস চরমপন্থিদের নিয়ন্ত্রণ ও হামলা ঠেকাতে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। প্রয়োজনের নিরিখে ও চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার এ সহযোগিতা নিতে আগ্রহী। সংলাপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যুগপোযোগী প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
বাংলাদেশে মার্কিন সাহায্যকারী সংস্থার কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান খুন হওয়া এবং ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তা সহযোগিতা আরো গুরুত্ব পেয়েছে। সংলাপে এসব হামলার ঘটনা নিয়ে আলোচনা ও করণীয় ঠিক করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
দুদেশের মধ্যে পরপর চারটি নিরাপত্তা সংলাপ এরই মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সংলাপের মধ্য দিয়ে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে তথ্য আদান-প্রদান, সামরিক বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘নিরাপত্তা সংলাপ’ শুরুর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ধরনের সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া যেত, চার দফা সংলাপের পর সেসব সহযোগিতা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে সামরিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণের পরিধি ও মান বেড়েছে।
নিরাপত্তা সংলাপের ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস দমন চুক্তি সই হয়েছে। তিন বছর আগে ঢাকায় সই হওয়া এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সন্ত্রাস প্রতিরোধে আধুনিক কলাকৌশল বিনিময়, উভয় দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ফরেনসিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, সম্মতিক্রমে আইনগত সহায়তা প্রদান, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সহযোগিতা বৃদ্ধি, সম্মতিক্রমে সাইবার অপরাধ দমনে সহযোগিতার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
গতবারের নিরাপত্তা সংলাপে বাংলাদেশের সমুদ্র নিরাপত্তার বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দে্ওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যেই দুই দেশ যৌথভাবে সমুদ্র নিরাপত্তার বিষয়ে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলেও মনে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর ভূ-কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্র সংক্রান্ত বিষয়ে চীনের কাছ থেকেও সহযোগিতা নিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। তবে সমুদ্র সংক্রান্ত বিষয়ে চীন-বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সমুদ্র নিরাপত্তা সহযোগিতায় কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে তাদের ঘাঁটি করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
এর আগে দুই দেশের মধ্যে প্রথম নিরাপত্তা সংলাপ ২০১২ সালের এপ্রিলে ঢাকায় ও দ্বিতীয় নিরাপত্তা সংলাপ ২০১৩ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হয় ওয়াশিংটনে। ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল ঢাকায় তৃতীয় আর সর্বশেষ ওয়াশিংটনে গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.