এবিএনএ : বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে প্রেরণা যুগিয়েছেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গমাতা অসাধারণ বুদ্ধি, সাহস, মনোবল, ও দূরদর্শিতার অধিকারী ছিলেন এবং আমৃত্যু দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। শনিবার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনের অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার। অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার কর্মময় জীবনের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেগম মতিয়া চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুনন্নেসা ইন্দিরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব হারিয়ে মা আমার দাদা-দাদির কাছেই মানুষ হয়েছেন। আমার পরিবারের সঙ্গে এমনভাবে মিশে ছিলেন যে, দাদিকে তিনি বাবা বলে ডাকতেন। একটা পরিবার তিনি পেয়েছিলেন, কিন্তু তার মনের মধ্যে যে শূন্যতা, পিতা-মাতার অভাব সেটি থেকেই গিয়েছিল। তবে স্বামীর কাছ থেকে তিনি যে ভালোবাসা পেয়েছেন, যে সমর্থন পেয়েছেন, সেটিও বিরল।’
'আমার মায়ের যে কেউ নেই, বাবা কখনো তা উপলব্ধি করতে দেননি। তার মায়ের প্রতি খুব আস্থা-বিশ্বাস ছিল। বাবার প্রতিটি কাজে তিনি সমর্থন করেছেন, সাহস যুগিয়েছেন। সংসারের কোনো বিষয় নিয়ে তাকে বিরক্ত করেননি।’ বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বঙ্গমাতা সংসার ও সংগঠন দুটি সামলেছেন- সেটির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মা যখন বাবার সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে যেতেন, সাহস দিয়ে বলতেন- সংসারের কথা যেন তিনি চিন্তা না করেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। বাবার নির্দেশনা কারাগার থেকে সংগঠনের কাছে পৌঁছে দিতেন।
১৫ আগস্টের নৃশংস ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী যা পারেনি, স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে সেই ঘটনা ঘটলো। পিতা-মাতা হারানো আমার মা সারাজীবন শুধু দিয়েই গেছেন। তিনি জানতেন, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি আসবে, তারা ভালো থাকবে। তাই বাবার আদর্শ তিনি ধারণ করে তার জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মা একদিকে সংসার চালাতেন, অপরদিকে বাবা কারাগারে থাকায় তার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বাবা যখন প্রধানমন্ত্রী, আমার মায়ের এ নিয়ে কোনো অহমিকা ছিল না। সরকারি বাসভবনে বসবাস করেননি। যাতে সন্তানরা বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত না হয়। আমাদের সাধারণ জীবনযাপনে, মাটির দিকে তাকিয়ে চলার শিক্ষা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হয়েও নিজের হাতে রান্না করে বাবার জন্য টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার পাঠিয়ে দিতেন।’
'৬ দফা দাবির পর আগরতলা ষড়যন্ত্রের মামলার সময়ে দলকে সংগঠিত করে আন্দোলন গড়ে তোলা, ছাত্রসমাজের যে আন্দোলন; সেটিতে আমার মায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রয়েছে। আমি দেখেছি, কীভাবে এর পক্ষে জনমত তৈরি করেছেন। ৭ মার্চের ভাষণের সময়েও অনেকে অনেক কথা বলেছিলেন। মা বলেছিল, সারাজীবন জনগণের জন্য কাজ করেছ তুমি। তোমার মনে যা আসে তাই বলো।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সময়ে নির্যাতনের শিকার মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দিকে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেলিন আমার মা। তাদের বিয়ে দিয়েছেন, সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ১ হাজার ৩০০টি সেলাই মেশিন, ১০০ ল্যাপটপ ও ১৩ হাজার উপকারভোগীদের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি।১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিহত হন।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.