এবিএনএ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পশ্চিমবঙ্গ সফরের আলোচ্যসূচিতে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি নেই কেন সেই প্রশ্ন রেখেছেন রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, সরকার আট বছর ধরে এই চুক্তির ঘোষণা দিয়ে আসলেও তারা ভারতের কাছ থেকে এক বালতি পানিও আনতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গ সফরের আগের দিন বৃহস্পতিবার দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতনে যাচ্ছেন তিনি। সেখানকার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেয়া ছাড়াও ‘বাংলাদেশ ভবনের’ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে থাকবেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। পরে চুরুলিয়ায় কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালের সমাবর্তনেও যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। সেখানে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, এই সফরের উদ্দেশ্য তিস্তা চুক্তি নয়, তবুও এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা বেশি হচ্ছে। ২০১১ সালে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে আটকে গেছে এই চুক্তি। আর ২০১৭ সালের এপ্রিলে শেখ হাসিনার ভারত সফরে বর্তমান সরকারের মেয়াদেই চুক্তি করার বিষয়ে আশ্বাস দেন নরেন্দ্র মোদি। যেহেতু পশ্চিমবঙ্গে মোদি এবং মমতা-দুই জনের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর কথা হবে, সেহেতু এই চুক্তির কোনো অগ্রগতি হয় কি না, সে দিকে নজর থাকবে বাংলাদেশের।
শেখ হাসিনার সফরের এজেন্ডা বা আলোচ্যসূচিতে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘বিগত আটটি বছর ধরে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়ে আসছে যে, তারা ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে যাচ্ছে। বন্ধুত্বের এত দহরম মহরম অথচ শেখ হাসিনা ভারত থেকে এক বালতি পানিও আনতে পারেননি আট বছরে।’ ‘বছর যায় বছর আসে আর বাংলাদেশ অবৈধ সরকার শুধু একতরফাভাবে ভারতকে সবকিছু দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য পানির হিস্যা বুঝে পাচ্ছে না।’ ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে সার্বভৌমত্বকে ক্ষয়িষ্ণু করে ভারতকে সব কিছু উজাড় করে দিয়ে যাচ্ছেন বিনিময়ে কিছুই পাননি।’ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এখন ভারতের কাছে, এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘পরদেশের কাছে সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছেন শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকা। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার বিদ্যাটাই ভাল করে রপ্ত করেছেন।’
ছাত্রদল নেতাকে তুলে নেয়ার অভিযোগ
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ফয়সাল আহমেদ সজলকে তুলে নেয়ার অভিযোগও করেন রিজভী জানান, গত দুই দিন ধরে খুঁজে তাকে পাওয়া পাচ্ছে না। ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে তুলে নিয়ে গেছে বলে তার সহকর্মীরা আশঙ্কা করছে।’ ‘আমাদেরও বিশ্বাস এভাবে তুলে নিয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। সে পুরনো কায়দায় বিরোধীদল নিধনের হাতিয়ার হিসেবে তাকে তুলে নেওয়া হয়েছে।’ ‘কারণ সে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার বিরোধী আন্দোলনের একজন তরুণ নেতা। রাজপথের সাহসী সৈনিক। বেছে বেছে বিরোধী দলের তরুণ নেতা-কর্মীদের যেভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে অথবা বিচারবর্হিভূতভাবে হত্যা করা হচ্ছে তারই ধারাবাহিক শিকার হলো এই মেধাবী ছাত্র নেতা সজল।’‘এটি যেন সেই ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হিরুসহ দেশব্যাপী অসংখ্য গুমেরই নতুন চিত্র।’ ‘সজলকে গুম করা সরকারের একটি সিগন্যাল। এ ঘটনা সামনে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্যের আভাসই ফুটে উঠেছে।
মাদক নির্মূল অভিযানে হত্যার সমালোচনা
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে প্রাণহানির আবার সমালোচনা করেন রিজভী। বলেন, দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম, মামাজিক মাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বেআইনি মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে তুমুল সমালোচনা করলেও এখনও থামছে না বিচারবর্হিভূত হত্যা।’ অভিযানে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হচ্ছে না অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘গণমাধ্যমেও মাদকের গডফাদারদের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু তাদের ধরা হচ্ছে না।’ এভিাবে মানুষ হত্যা করে কোনো দিন মাদক নির্মূল সম্ভব নয় অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এর পেছনে সরকারের অসৎ উদ্দশ্য আছে।’ ‘আমরা শুরু থেকেই বলেই আসছি মাদক নির্মূল সরকারের উদ্দেশ্য নয়। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দল নিধনের জন্যই মাদক বিরোধী অভিযানের নামে দেশজুড়ে বিচারবহির্ভূত মানুষ খুনের জোরেশোরে ধুমধাম চলছে।’ ‘বেআইনি হত্যার মাধ্যমে দেশবাসীকে আতঙ্কিত করার ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। তা হলো একটি রক্তাক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষ ভয় পাইয়ে দেওয়া যাতে তারা অবৈধ সরকারের অনাচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহসী না হয়।’ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করাই সরকারের নীল নকশা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘ওই নির্বাচনের পূর্বে যদি মাঠ সমতলের বদলে রক্তাক্ত থাকে তাহলে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে সাহসী হবে না।’
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.