এবিএনএ : রাজধানীর কলাবাগানে ফুটওভার ব্রিজের নিচে থাকা দুই পথশিশু ও অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোসাম্মৎ সুলতানা পারভীন। বুধবার সকাল ১০টায় দুই পথশিশু ও অসুস্থ মায়ের খোঁজ নিতে ঢাকার কলাবাগানে ছুটে আসেন ডিসি সুলতানা পারভীন। পরে তিনি দুই শিশু ও মায়ের সব রকমের দায়িত্ব নেন। এ সময় জেলা প্রশাসককে দুই পথশিশুর মাথায় হাত দিয়ে আদর করতে দেখা যায়। তিনি শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার নিয়ে আসেন। এ সময় যুগান্তরকে সুলতানা পারভীন বলেন, আমি ঢাকায় অফিসিয়াল কাজে এসেছিলাম। যুগান্তরে সংবাদ দেখে আমি কলাবাগানে তাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। এ অসহায় পরিবারকে আমি সব রকমের সহায়তা করব। তাদের থাকার জায়গা ও ঘর তোলার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে নগদ টাকা দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের কুড়িগ্রামে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানান তিনি। সুলতানা পারভীন বলেন, দুই শিশুর লেখাপড়ার দায়িত্ব আমি নিয়েছি। জেলা প্রশাসন থেকে তাদের সব রকমের সহায়তা করা হবে। সরকার সব শিশুকে প্রাথমিক স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক করেছে। এটি আমার সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বের ভেতরে পড়ে।জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন পথ শিশুদের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন। জেলা প্রশাসক বলেন, ওই পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। তারা যেন কোনো ধরনের অভাবে না থাকে। প্রয়োজনে তাদের হাল-চাষের গরু দেয়া হবে। এমন অসহায় দুস্থদের জন্য সরকারের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। সেখান থেকেই সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে। এ সময় ঢাকার কুড়িগ্রাম সমিতির মহাসচিব সাইদুল আবেদীন ডলার, সেফটি স্কুলের নির্বাহী সম্পাদক সাখাওয়াত স্বপন ও ফেসবুকে ভিডিও ধারণ করে দেয়া তরুণ পারভেজ হাসান উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ঢাকাস্থ কুড়িগ্রাম সমিতির সম্পাদক বা থেকে সাইদুল আবেদীন ডলার, যুগান্তরের সাব এডিটর হোসাইন এমরান, সেফটি স্কুলের নির্বাহী পরিচালক সাখাওয়াত স্বপন (ডান থেকে প্রথম) ও ফেসবুকে পেজে ভিডিও দেয়া পথচারী পারভেজ হাসান (ডান থেকে দ্বিতীয়)। ঢাকার কুড়িগ্রাম সমিতির মহাসচিব সাইদুল স্বপন বলেন, আমরা বিভিন্ন ধরনের মানবিক কাজ করে থাকি। আমরা দায়িত্ব নিয়ে বৃস্পতিবার রাতে ওই পরিবারকে বাসে তুলে দেব। সেফটি স্কুলের নির্বাহী সম্পাদক সাখাওয়াত স্বপন বলেন, আমার তরফ থেকে সব ধরনের সহায়তা করব। পথ শিশুদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকসহ অন্যরা প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সোবহানবাগ মসজিদের কাছে প্রচণ্ড জ্বর আর শরীর ব্যথা নিয়ে ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা যায় এক অসুস্থ মাকে। শনিবার সারা দিনও ফরিদা রাস্তায় পড়েছিলেন। এদিন সন্ধ্যায় দেখা যায়, মাকে বাঁচাতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে ছোট দুই শিশু। তারা প্লাস্টিকের বোতলে করে পানি এনে মায়ের মাথায় ঢালছিল। এ দৃশ্য দেখে তা মোবাইল ফোনে ধারণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম জুয়েল। তিনি ছবিটি ফেসবুকেও শেয়ার করেন। এ ছাড়া পারভেজ হাসান নামে আরেক পথচারীও অসুস্থ মায়ের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। রোববার যুগান্তরে ‘ঢাকায় অসুস্থ মাকে বাঁচাতে ২ পথশিশুর লড়াই’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এর পর সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যুগান্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অসুস্থ ফরিদাকে সাহায্যের জন্য। দেশ-বিদেশের মানুষের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার আশ্বাসে রোববার রাতেই যুগান্তর টিম বের হয় সেই পথশিশু আর অসুস্থ মায়ের খোঁজে। রোববার রাত ৯টায় যুগান্তর টিম সেই অসুস্থ মায়ের ঠিকানা কলাবাগান ফুটওভার ব্রিজের নিচে পৌঁছায়। জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়ার কথা বলতে গিয়ে যুগান্তর টিমের কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন অসুস্থ ফরিদা। তিনি বলেন, আমি আর ঢাকায় থাকতে চাই না। আমি বাড়ি ফিরতে চাই। যদি সহযোগিতা পাই, গ্রামে জমি কিনে ঘর তুলে কাজ করে খাব। এদিকে এমন খবরে টনক নড়ে জেলা প্রশাসনসহ কুড়িগ্রামের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের। মঙ্গলবার যুগান্তরকে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোবাইলে জানান, ওই অসহায় পরিবারের তিনি সব রকমের দায়িত্ব নিতে চান।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.