এবিএনএ : সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে- প্রত্যেক গর্ভবতী নারী গর্ভাবস্থার শুরুতেই এটি জানতে চান। প্রকৃতপক্ষে, যেসব দম্পতি প্রথমবার মা-বাবা হতে যাচ্ছেন তাদের কথোপকথনের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ হলো গর্ভস্থ বাচ্চার লিঙ্গ।
অনেক দম্পতি এ বিষয়ে এতটাই কৌতূহলী হন যে, জানতে চিকিৎসকের কাছে যান। হ্যাঁ এটা সত্য যে, আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে শিশুর লিঙ্গ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। কিন্তু কন্যাশিশু মেরে ফেলার কারণে কিছু দেশে গর্ভস্থ বাচ্চার লিঙ্গ শনাক্তকরণ পরীক্ষা নিষিদ্ধ করেছে। যেমন: ভারত। অনেকের মতে, ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যায়, পরিবারে কন্যা সন্তানের আগমন ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু এসব ধারণা কতটা সত্য?
উঁচু পেট
পেট বেশি উঁচু হলে অনেকে নিশ্চিত থাকেন যে, মেয়ে হবে। আমরা বলছি না, তাদের ধারণা মিথ্যা। তবে এই ধারণা ভুলও হতে পারে। এটা মনে রাখা ভালো যে, পেট বেশি উঁচু হওয়ার আরেকটি কারণ রয়েছে। ভালো শারীরিক গঠনের যেসব নারী প্রথমবার মা হতে যাচ্ছেন তাদের পেট বেশি উঁচু হতে পারে। নারীর শরীরের আকৃতি, পেটের পেশি এবং গর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধি- এসব কারণেও পেট উঁচু হতে পারে। কয়েকবার গর্ভবতী হলেও পেটের পেশির নমনীয়তার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এসবের ওপর বাচ্চার লিঙ্গের কোনো প্রভাব নেই।
পেটের কোথায় গর্ভস্থ বাচ্চার ওজন বহন করা হচ্ছে তার ভিত্তিতে একটি ধারণা প্রচলিত রয়েছে। কারো পেটের মাঝখানে গর্ভাবস্থাজনিত ওজন বাড়লে ধারণা করা হয় যে তিনি কন্যা সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন। কিন্তু এটাও একটি ভুল ধারণা। কোনো নারী পেটের মাঝখানে ওজন বহন করলে এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে না যে মেয়ে হবে। তিনি ছেলে সন্তানেরও মা হতে পারেন। গর্ভাবস্থাজনিত ওজন কোথায় বাড়বে তা নির্ভর করে গর্ভবতী নারীর শারীরিক আকৃতি, ওজন বৃদ্ধি ও অন্যান্য শারীরিক অবস্থার ওপর।
গর্ভস্থ বাচ্চার দ্রুত হৃদস্পন্দন হার
কেউ কেউ অধীর আগ্রহ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে জানতে চান, শিশুর হৃদস্পন্দন হার (হার্ট রেট) কত? কারণ তারা শুনেছেন, হৃদস্পন্দন হার যত বেশি হবে, মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। অনেকের মতে, গর্ভস্থ বাচ্চার হৃদস্পন হার প্রতি মিনিটে ১৪০ এর বেশি হলে মেয়ে হবে। কিন্তু জেনে রাখুন, এটাও ভুল ধারণা। সাধারণত মেয়ে শিশুর হৃদস্পন্দন ছেলে শিশুর চেয়ে দ্রুত হয়, কিন্তু এটা কেবলমাত্র প্রসব প্রক্রিয়া শুরুর পরে। গর্ভাবস্থার ৫ম সপ্তাহে ভ্রুণের হৃদস্পন্দন হার মায়ের মতো একই থাকে- প্রতি মিনিটে ৮০ থেকে ৮৫ এর মধ্যে। তারপর ৯ম সপ্তাহ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত হারে বাড়তে থাকে- প্রতি মিনিটে ১৭০ থেকে ২০০। এরপর কমতে শুরু করে গড়ে ১২০ থেকে ১৬০ হয়।
মিষ্টি খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা
বলা হয়, গর্ভাবস্থায় বেশি করে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে চাওয়ার মানে হলো শরীরের ভেতর কন্যা সন্তান বেড়ে ওঠছে। এর পরিবর্তে এ সময় যাদের লবণাক্ত বা টক জাতীয় খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়ে তারা নাকি ছেলে সন্তানের মা হবেন। কিন্তু এসব আসলে ধারণা মাত্র। গবেষকরা জানান, গর্ভাবস্থায় অদ্ভুত অদ্ভুত খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধির একটি সম্ভাব্য কারণ হলো, কিছু নির্দিষ্ট মিনারেলের ঘাটতি। এর সঙ্গে গর্ভস্থ বাচ্চার লিঙ্গের কোনো সম্পর্ক নেই।
ব্রণ ও তৈলাক্ততা
গর্ভাবস্থায় অনেকের ত্বকে বেশি করে ব্রণ ওঠে ও তৈলাক্ততা বাড়ে। বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে। একটি সাধারণ বিশ্বাস যে, পেটের ভেতর কন্যা শিশু আছে বলে এমনটা হচ্ছে। কারণ মায়ের সৌন্দর্য তার কাছে চলে যাচ্ছে। গবেষকদের মতে, গর্ভকালে ত্বক তৈলাক্ত হওয়া ও ব্রণ ওঠার সঙ্গে গর্ভস্থ সন্তানের লিঙ্গের কোনো সম্পর্ক নেই। এর দায়ভার হরমোনের ওপর চাপাতে পারেন। গর্ভাবস্থায় অ্যান্ড্রোজেন নামক হরমোন বেড়ে যায় বলে বেশি করে সিবাম উৎপন্ন হয়। এই তৈলাক্ত পদার্থ ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করে দেয় ও ব্রণের প্রাদুর্ভাব ঘটায়।
সকালবেলা বেশি অসুস্থতা
আরেকটি প্রচলিত বিশ্বাস যে, গর্ভাবস্থার যে কোনো পর্যায়ে সকালে অত্যধিক অসুস্থ হওয়ার অর্থ হলো, মেয়ে শিশু জন্ম নিতে যাচ্ছে। কিন্তু এটাও একটি ভুল ধারণা। প্রকৃতপক্ষে, গর্ভকালে সকালের অসুস্থতা (বিশেষত বমিভাব ও বমি) হলো একটি সাধারণ উপসর্গ। সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম চার মাসে এই লক্ষণ প্রকট হয়। এটি প্রায়ক্ষেত্রে গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ। হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে একজন গর্ভবতী নারী সকালে অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন। এর আরেকটি কারণ হলো, রক্ত শর্করা কমে যাওয়া। যাদের পেটে যমজ বাচ্চা রয়েছে তারা বেশি অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন। যিনি প্রথমবার মা হতে যাচ্ছেন তিনিও বেশি অসুস্থ হতে পারেন।
মেজাজের দ্রুত পরিবর্তন
হঠাৎ করে দ্রুত মেজাজ খুব খারাপ হয়ে গেলে অনেকে মনে করেন মেয়ে হবে। কিন্তু এই ধারণার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। গবেষকদের মতে, গর্ভাবস্থায় মেজাজের অননুমেয় পরিবর্তনের একটি কারণ হলো হরমোন বৃদ্ধি। গর্ভাবস্থার প্রাথমিক দিনগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন উৎপন্ন হয়। এই দুটি হরমোন মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে গর্ভবতী নারীর ভালো মেজাজ দ্রুত খারাপ হয়ে যেতে বেশিক্ষণ সময় লাগে না।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.