এবিএনএ: নয় মাস অপেক্ষার পরও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে কোনো ধরনের বার্তা না পেয়ে মো. ফারুক হোসেন যান মিরপুর বিআরটিএ কার্যালয়ে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তার ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। বিআরটিএ লাইসেন্স সরবরাহে নতুন করে সময় নিয়েছে। এভাবে তিনবার নতুন তারিখ দিলেও ফারুককে লাইসেন্স দিতে পারেনি বিআরটিএ। শুধু ফারুক নয়, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে এভাবে মাসের পর মাস কিংবা বছর পার হলেও ড্রাইভিং লাইসেন্সের সেই সোনার হরিণ যেন ধরা দিচ্ছে না!
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেন্ডিং ছিল সোয়া এক লাখ। লাইসেন্স তৈরির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ‘টাইগার বিডি’ কালো তালিকাভুক্ত হবার পর নতুন করে টেন্ডার ছাড়া হয়েছে। নতুন প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি ও সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে গত সেপ্টেম্বর থেকে পৌনে তিন মাসে জমতে জমতে সাড়ে ছয় লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স ঝুলে আছে বিআরটিএ কার্যালয়ে। তবে বিআরটিএ কর্মকর্তারা বলছেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স না পেলেও যে কেউ চাইলে অস্থায়ীভিত্তিতে একটা অনুমোদনপত্র দেয়া হচ্ছে। যেটা কাছে থাকলে সব জায়গায় বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সের সুবিধা পাওয়া যাবে। মামলাও করতে পারবে না।
চুক্তি অনুযায়ী শর্ত ছিল, প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের মধ্যে অর্থাৎ পাঁচ বছরে গড়ে তিন লাখ করে ১৫ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স (স্মার্টকার্ড) সরবরাহ করবে। এরপর পুরো সিস্টেম বিআরটিএর কাছে হস্তান্তর করবে। কিন্তু নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের পর ও রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব হলে ড্রাইভিং লাইসেন্সের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়। সোয়া ১৫ লাখের চাহিদার মধ্যে তিন বছরে ১৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করে টাইগার আইটি। বাকি সোয়া এক লাখ লাইসেন্স প্রিন্টের সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষপর্যায়ে থাকতেই চুক্তি থেকে সরে আসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। তারপরও টাইগার আইটি বিআরটিএর কাছে আরও ৫০ শতাংশ চুক্তির অতিরিক্ত কার্ড সরবরাহের অনুমতি চায়। এর বিপরীতে ৩০ শতাংশ হিসাবে আরও সাড়ে চার লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহের অনুমোদনের জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠায় বিআরটিএ।
এ ব্যাপারে বিআরটিএর পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) এ কে এম মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংকটের বিষয়টি স্বীকার করেন। ‘বিআরটিএর একটা সংকট যাচ্ছে। টাইগার আইটির সঙ্গে কাজের মেয়াদ শেষ। নতুন কোম্পানির সঙ্গে কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে গেল সপ্তাহে। সেটা পার্চেস কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটা পাস হয়ে গেলে লাইসেন্স প্রদানের সংকট আর থাকবে না। নতুন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কাজ পেলে দুই লাখ কেন ১০ লাখ হলেও আমরা দ্রুত দিতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘কেউ যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স না-ও পান, তাহলেও সমস্যা হবে না। যারা লাইসেন্সের জন্য টাকা জমা দিয়েছেন, পরীক্ষায় পাস করে লাইসেন্সপ্রাপ্তির জন্য বসে আছেন, ওই পেপার দেখালে কেউ পানিশমেন্ট পাবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘অস্থায়ীভাবে একটা অনুমোদনপত্র আমরা দিচ্ছি। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবার আগ পর্যন্ত তারা ওই অনুমোদনপত্রের মাধ্যমে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন।’
বিআরটিএ পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) লোকমান হোসেন মোল্লা বলেন, ‘টাইগার আইটির ব্যাপারে মন্ত্রণালয় নেতিবাচক। কারণ জাতিসংঘ থেকে ওই প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সে কারণে নতুন করে কাজের অনুমোদন দেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হলেও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তো বিআরটিএর নেই।’ আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করেন তিনি।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.