এবিএনএ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হলে না করে একাডেমিক ভবনে করার দাবিতে আন্দোলনে নামছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যসব সব ছাত্র সংগঠন।
নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে গেলেও পরিস্থিতির আলোকে প্রয়োজনে জোটবদ্ধ কর্মসূচি পালন করতে পারে তারা। এক্ষেত্রে যোগ হতে পারে সম্প্রতি কোটা সংস্কারের সফল আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদও। তারাও সংঘবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামার ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
নেতারা বলেন, হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র না নিলে এ নির্বাচনও গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হবে। তাই তারা একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করার দাবিতে অনঢ় থাকছেন। এদিকে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সভায় ভোটকেন্দ্র হলে রাখার ব্যাপারেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে অধিকাংশ ছাত্র সংগঠনের দাবিকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও প্রশাসন বলছে, ডাকসু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে নেয়ার নজির নাই। ডাকসুর গঠনতন্ত্রে হলেই ভোটকেন্দ্র রাখার ব্যাপারে স্পষ্ট বক্তব্য আছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মু. সামাদ বলেন, ‘হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। প্রশাসন সেটি করতেও পারে না। এটা নৈতিকতার প্রশ্ন। আমরা শিক্ষকরা এখানে কাজ করবো। এটাতো উপজেলা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন না যে, এ দাবি করবে, ওই দাবি করবে।’
আর ছাত্র সংগঠনগুলো বলছে সময়ের প্রয়োজনে তারা ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে এনে একাডেমিক ভবনে করার প্রস্তাব করেছে। এক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র সংশোধনের দাবি করেছিল তারা। বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো মনে করে হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হলে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য বিরাজ করবে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভয়ে ভোটকেন্দ্র যাবে না।
ডাকসু নির্বাচনের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৯৪ সালে একই ইস্যুতে ডাকসুর তফসিল ঘোষণার পরও নির্বাচন হয়নি। সে সময় বর্তমান ক্ষমতাসীনদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র নেয়ার দাবিতে আন্দোলন করে। আর এবার ছাত্রদলই হলের ভোটকেন্দ্র রাখার দাবি তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা ছাড়া উপায় ছিল না তৎকালীন প্রশাসনের।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি প্রকাশ করেছে তা দেখে প্রতীয়মান হচ্ছে- এটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পূর্বপরিকল্পিত। হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও বয়সের বিষয়ে শুধু একটি সংগঠন ছাড়া অন্য কারো বক্তব্য গ্রহণ করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের পরিচয় হয়- নিয়মিত বা অনিয়মিত। কিন্তু ৩০ বছর কেমন ক্রাইটেরিয়া? একটি সংগঠন বলেছে- ৩০ বছর করার জন্য, তা হয়েছে। তারা বলেছে- হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের, তা করা হয়েছে। আমাদের মনে হয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত তাদের বক্তব্যের কপি পেস্ট।’
বাশার সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো সংবিধান ও আচরণবিধিতে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা এটাকে প্রত্যাখ্যান করছি। এ পরিবেশে নির্বাচন হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো- এ সমস্ত হঠকারী ও হীন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে। সকল শিক্ষার্থীর দাবির আলোকে নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে তুলতে। এরপর তফসিল ঘোষণা করতে। নতুবা ডাকসু নির্বাচনও জাতীয় নির্বাচনের মতো প্রহসনে পরিণত হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবিতে আন্দোলনে যাবো। যদি পরিস্থিতি ডিমান্ড করে প্রয়োজনে জোটবদ্ধ আন্দোলনও হতে পারে।’ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অধিকাংশের মতামতকে অগ্রাহ্য করে শুধুমাত্র একটি মাত্র ছাত্র সংগঠনকে জেতানোর লক্ষ্যে হলেই ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে। আমরা বারবার বললেও হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপনে গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়নি।’ তিনি বলেন, তবে আমরা এখনও আশাবাদী তফসিল ঘোষণার আগে প্রশাসন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। নতুবা আমরা সব ছাত্র সংগঠনকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।’
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর বলেন, ‘আমরা মনে করি এই নির্বাচন হবে পাতানো নির্বাচন। প্রশাসন তাদের মতো করে ছাত্রলীগকে জেতানোর নির্বাচন করতে চায়। আমরা মনে করি, এখন ভোটকেন্দ্র বাইরে নিয়ে আসার দাবিতে আন্দোলনটা করতে হবে। এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের বিজয়টা নিশ্চিত করতে হবে। এটা না হলে আমরা নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.