এবিএনএ : বিশ্ববাজারে চীনের পোশাকের দর বৃদ্ধি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য নতুন রফতানি সম্ভাবনা তৈরি করেছে। বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের পোশাকের দর এক ডলার বাড়লে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদা বাড়বে এক দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের পোশাকের সার্বিক মূল্য ১০ শতাংশ বাড়লে বাংলাদেশে এ খাতের কর্মসংস্থান ৪ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়তে পারে। প্রায় কাছাকাছি সম্ভাবনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশ বিশেষত ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার জন্যও রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এ সুযোগ ধরতে হলে সফলভাবে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তামানসহ কর্মপরিবেশের (কমপ্লায়েন্স) উন্নয়ন, উত্পাদনশীলতা, পণ্যের মান, লিড টাইম, বিশ্বাসযোগ্যতা, পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে হবে।
‘স্টিচেস্ টু রিচেস্ : এপারেল এমপ্লয়মেন্ট, ট্রেড এন্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রতিবেদন বিআইডিএস ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে প্রকাশ করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর কুইমিয়াও ফ্যান ছাড়াও অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। বিআইডিএস মহাপরিচালক কেএসএস মুরশিদের পরিচালনায় প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট গ্ল্যাডিস লোপেজ এইচভেডো।
এ সময় সিপিডি’র (সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চীন বিশ্ব পোশাকের বাজারে ৪০ শতাংশ নিয়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। আর বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৪ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয়। প্রথম আর দ্বিতীয় অবস্থানের মধ্যে স্পষ্টতই বিশাল ফারাক। সামনের বছরগুলোতে চীনের এ দখলদারিত্ব ১৩ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। অন্যান্য দেশের তুলনায় এ খাতে বাংলাদেশের মজুরি এখনো কম। কিন্তু বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটিই একমাত্র কারণ হবে না। রানা প্লাজার পর এ খাতে বেশ পরিবর্তন এসেছে। কাঠামোগত অনেক কাজ করতে হয়েছে এবং হচ্ছে। এ জন্য ব্যয় বাড়ছে। ট্রেড ইউনিয়নের জন্য বাংলাদেশ চাপে রয়েছে। কিন্তু চীনসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে সেই চাপ নেই। অন্যদিকে টিপিপি’র (ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ) কারণে বড় প্রতিযোগী ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। কিন্তু বাংলাদেশকে ১৫ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। তবে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য উত্পাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণে মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
কুইমিয়াও ফ্যান রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি কিছু বাধাও রয়েছে বলে মত দেন। তিনি মনে করেন, চীনের ছেড়ে দেয়া অংশের বেশিরভাগ বাংলাদেশ পেতে চাইলে কিছু নীতিমালার পরিবর্তন এবং সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজন।
বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ৮৩ শতাংশই যায় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। বাজার বহুমুখীকরণের চেষ্টা চলমান রয়েছে। পণ্য বহুমুখীকরণের অংশ হিসাবে কিছু উচ্চমূল্য সংযোজনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। ২৮টি গ্রিন কারখানা চালু হয়েছে। আরো ১৮০টি সহসাই চালু হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কিন্তু গ্যাস ও বিদ্যুত্ সংকট কাটাতে হবে। এ জন্য সরকারের নীতি সহায়তা প্রয়োজন। মোট রপ্তানিতে পোশাক খাতের অবদান ৮০ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও এ খাত প্রকৃত অর্থে কতটুকু গ্যাস খরচ করে তা বিবেচনায় নিতে হবে। এ নিয়ে বিশ্বব্যাংক আলাদা আরেকটি গবেষণা করতে পারে বলে মত দেন তিনি।
ড. মসিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে কম মজুরির কথা বলা হলেও এই সুবিধা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। এটি সাময়িক। দুই তিন বছর পর বিশ্ববাজারে টিকতে হলে অন্যান্য বিষয়ও ভাবতে হবে। বিশেষত দক্ষতা অর্জনে বিশেষ নজর দিতে হবে।
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন বিআইডিএস -এর গবেষণা ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখ্ত, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, এশিয়ান ফাউন্ডেশনের হাসান মজুমদার, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি সালাউদ্দিন কাশেম খান প্রমুখ।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.