এবিএনএ : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার, বাতিলের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে দ্রুত প্রতিবেদন চেয়েছে ক্ষমতাসীন জোট ১৪ দল। তারা বলছে, এই বিষয়টি নিয়ে চক্রান্ত চলছে। তারা যেন সুযোগ নিতে না পারে, তাই প্রতিবেদনটি দ্রুত আসা উচিত। সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের বৈঠক শেষে ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এই দাবি করেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে একটি মহল একের পর এক চক্রান্ত করছে। কোন ইস্যু না পেয়ে কোটা সংস্কার ইস্যু নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে।’ ‘প্রধানমন্ত্রী যেহেতু একটি পর্যায়ে সংসদে বলেছিলেন কোটা রাখবেন না। তারপরেও তিনি একটি কমিটি করে দিয়েছেন কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে, সেই কমিটি কাজ করছে।’ সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়ে সুপারিশ দিতে গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন হয়। তাদেরকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। গঠনের ছয় দিনের মাথায় গত ৮ জুলাই কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। এতে সাত দিনের মধ্যে দেশ-বিদেশে কোটা ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশে কোটা সংস্কার নিয়ে নানা সময় নানা সুপারিশ যোগাড় করে আবার বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। তবে এসব প্রতিবেদক ও সুপারিশ যোগাড় হয়েছে কি না, তা এখনও জানানো হয়নি আর কোটা কমিটি দ্বিতীয় বৈঠকে আর বসেনি। ১৫ কার্যদিবস অর্থাৎ ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব কি না, এই বিষয়টি নিয়েও কমিটির কেউ কিছু বলেননি। নাসিম বলেন, ‘আমরা কেবিনেট সচিবকে নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করতে চাই। আপনাদের কাজটি শেষ করে দ্রুততার সঙ্গে প্রতিবেদন দেন। কেউ যেন সুযোগ না নিতে পারে, কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে।’ সরকারি চাকরিতে কোটা বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই ছিল। বরং শুরুতে ৮০ শতাংশ কোটা থাকলেও পরে তা কমিয়ে ৫৬ শতাংশ করা হয়। তবে এ নিয়ে আন্দোলনের শুরু হয় ৯০ দশকে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা তাদের সন্তানদেরকে দেয়ার পর থেকে।
জামায়াত-শিবিরের অনুসারীরা তখন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমে ব্যর্থ হয়। এরপর ২০১৩ সালে আরেক দফা আন্দোলনে নেমে বিফল হয় তারা। তবে এবার কোনো কোটার নাম উল্লেখ না করে সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আসার দাবিতে মাঠে নামে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। গত ৮ এপ্রিল থেকে ঘটা নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোনো কোটা থাকবে না। তবে পরে জানা যায়, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় আছে। গত ১১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সংবাদ সম্মেলন করে এবং পরদিন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে এই রায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, এই কোটা বাতিল হলে আদালত অবমাননায় পড়বেন তিনি। নাসিম বলেন, ‘কোটা সিস্টেম আমাদের সংবিধানে আছে। ১৪ দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি অনগ্রসর মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’ ‘কেবিনেট সেক্রেটারির নেতৃত্বে কমিটি কাজ করছে আপনার ধৈর্য ধরুন। দীর্ঘ দিনের একটা সিস্টেমকে বদল করে আনতে একটু সময় লাগে।’ সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কোটা সংস্কারে বিষয়টির যৌক্তিক সমাধান চাই। আমরা আশা করি সমাধান পেয়ে যাব। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
নাসিম বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত তারিখে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। আমরা আশা করি দেশের সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। এমনকি বিএনপি নির্বাচনে আসুক সেটা আমরা চাই।’এক প্রশ্নের জবাবে ১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, ‘কাউকে নির্বাচন থেকে সরানোর কোন চিন্তা আমাদের নেই। আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনে জয় আসুক।’‘এখন তারাই চক্রান্ত করছে নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার জন্য। সংবিধানেই আছে কীভাবে নির্বাচন হবে। সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়, একইভাবে আমাদের দেশেও শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে।’‘তাই আমরা বলব, কোনো চক্রান্ত না করে নির্বাচনে আসুন জনগনের রায় গ্রহণ করুন।’নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা আছে কি না- জানতে চাইলে নাসিম বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল কীভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এটা তাদের বিষয়। এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কারও কোনো আলোচনা হয়নি। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনার কোন প্রশ্নই উঠে না।’বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, জাসদের একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.