এবিএনএ: এশিয়া কাপের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেল না পাকিস্তান। ইনজুরি নিয়ে খেলছেন মুশফিকুর রহীম এবং অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সাকিব আল হাসান নেই, নেই তামিম ইকবাল। এমন একটি দল নিয়েই এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে ৩৭ রানে হারিয়ে দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠল টাইগাররা। ফাইনালে তাদের সঙ্গী ভারত।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ২৪০ রানের জবাব দিতে নেমে পাকিস্তান থমকে গেল মাত্র ২০২ রানে। ওপেনার ইমাম-উল হক একাই লড়াই করলেন। তিনি খেলেছেন ৮৩ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস। তবে বাংলাদেশের বোলারদের সাঁড়াশি বোলিংয়ের সামনে এই ইনিংস আর খুব একটা কাজে লাগেনি। ঠেকাতে পারেনি পাকিস্তানের পরাজয়।
ম্যাচের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। দলীয় ১৮ রানের মাথায় তিন উইকেট হারায় তারা। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মেহেদি হাসান মিরাজের করা প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে রুবেল হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ফখর জামান (১)। পরের ওভারে মুস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ০ রানে ফিরে যান বাবর আজম।
এরপর মুস্তাফিজের দ্বিতীয় ওভারে পাকিস্তান দলের ক্যাপ্টেন সরফরাজ আহমেদ ৭ বলে ১০ রান করে মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন। দলীয় রান তখন ১৮। এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই দারুণ ফ্লিক শটে দুই রান নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু সেটি আর ধরে রাখতে পারেননি সৌম্য। শাহীন শাহ আফ্রিদির করা দ্বিতীয় ওভারে কোনো রান নিতে পারেননি লিটন, মেইডেন পান শাহীন। জুনায়েদ খানের করা তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে বড় শট খেলতে যান সৌম্য। কিন্তু গড়বড় করেন টাইমিংয়ে, বল উঠে যায় আকাশে। স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে লোপ্পা ক্যাচ নেন ফাখর জামান। প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করতে আসেন মুমিনুল হক।
পরের ওভারের চতুর্থ বলে শাহীন শাহ আফ্রিদিকে দুর্দান্ত এক ফ্লিক শটে ডিপ মিড উইকেট ও মিড অনের মাঝ দিয়ে ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি হাঁকান মুমিনুল। কিন্তু পরের বলেই ঘুরে দাঁড়ান শাহীন। অসাধারণ এক ডেলিভারিতে সরাসরি বোল্ড করেন মুমিনুলকে। ৪ বলে ৫ রান করে ফিরে যান তিনি। পরের ওভারে সৌম্য-মুমিনুলের পথ অনুসরণ করেন লিটনও। জুনায়েদ খানের মিড স্টাম্পে পিচ করা বল নিখুঁত আউটসুইংয়ে ভেঙে দেয় লিটন দাসের অফস্টাম্প। ১৬ বল খেলে মাত্র ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন।
এশিয়া কাপ স্কোয়াডে মিঠুনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বেশ, সংশয় ছিল একাদশে তার জায়গা পাওয়া নিয়েও। সেই মোহাম্মদ মিঠুনই গুরুত্বপূর্ণ দুইটি ম্যাচে হাঁকালেন ক্যারিয়ারের প্রথম দুইটি ফিফটি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসরের প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ৬৩ রানের ইনিংস। আর এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে করলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় পঞ্চাশ। মাত্র ১২ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেটের পতনে উইকেটে আসেন মিঠুন। চতুর্থ উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে সামাল দেন প্রাথমিক ধাক্কা। গড়েন শতরানের জুটি। শুরু থেকেই সাবধানী ভঙ্গিমায় খেলতে থাকেন মিঠুন। অপর প্রান্তে থাকা মুশফিককে দেন নির্ভরতার অভয়। ৬৬ বল খেলে মাত্র ৩ চারের মারে পূরণ করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। ইনিংসের ৩৪তম ওভারের চতুর্থ বলে পুল শট খেলতে গিয়ে বোলারের হাতেই ক্যাচ দিয়ে বসেন মিঠুন। থেমে যায় তার ৬০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস।
মোহাম্মদ মিঠুন ৬০ রান করে আউট হয়ে গেলেও সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন মুশফিকুর রহীম। কিন্তু কত বড় দুর্ভাগ্য তার! মাত্র ১ রানের জন্য ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরিটা মিস হয়ে যায় মুশফিকের। ৯৯ রানে গিয়ে শাহীন আফ্রিদির দারুণ এক ডেলিভারিতে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক। ফিরে যান একরাশ হতাশা নিয়ে। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে আউট হওয়ার রেকর্ডটা এতোদিন ধরে মুশফিকুর রহিমেরই দখলে ছিল। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনি আউট হয়েছিলেন ৯৮ রান করে। এবার সে রেকর্ডটিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ফিরলেন ৯৯ রান করে।
দলীয় ১৯৭ রানের মাথায় মুশফিকের বিদায়ের পরই থেমে যায় রানের চাকা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ চেষ্টা করলেও করতে পারেননি বেশি কিছু। ১১ বলে ১ চারের মারে ১২ রান করেন মিরাজ। আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক মাহমুদউল্লাহ চেষ্টা করে যান ভালো কিছু করার। কিন্তু তাকে থামতে হয় বড় শট খেলার তাড়নার কারণে। জুনায়েদ খানকে সজোরে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরত যান মাহমুদউল্লাহ। ৩১ বল খেলে ১ চারের মারে ২৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেষ দিকে ইনিংসের প্রথম ছক্কা হাঁকান অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার ১৩ বলে ১৩ রানের ইনিংসে ২৩৯ রানে থামে বাংলাদেশ দলের ইনিংস। পাকিস্তানের পক্ষে একাই ৪ উইকেট নেন জুনায়েদ খান। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন অন্য দুই পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলি।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.