এবিএনএ : তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রজব তাইয়েব এরদোগানকে ১০০ কেজি আম উপহার দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এই উপহার নিয়ে যান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট প্যালেসে এরদোগানের অভিষেক অনুষ্ঠান হয়। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অংশগ্রহণ করেন। সাথে উপহার হিসেবে ১০০ কেজি মৌসুমী ফল আম নিয়ে যান। তুরস্কের আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট প্যালেসে তুরস্কের পুনর্নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি রজব তাইয়েব এরদোগান- এর অভিষেক অনুষ্ঠান হয়। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম বলেছিলেন, সোমবার সকালে মন্ত্রী মহোদয় তুরস্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তিনি ১০০ কেজি আম নিয়ে গেছেন দেশটিতে। গত মাসে অনুষ্ঠিত তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোগান বিপুল ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। এরদোগান ৫২ শতাংশের বেশি ভোট পান। এর ফলে ফিরতি নির্বাচন এড়ানো গেছে। এরদোগান মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া এবং সহযোগিতার বিষয়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছেন।
রোহিঙ্গাদের দুর্দশায় অন্ধ ও বধির হয়ে গেছে বিশ্ব : এরদোগান
এএফপি, ৩০ আগস্ট ২০১৭
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অবর্ণনীয় দুর্দশায় বিশ্ব আজ ‘অন্ধ ও বধির’ হয়ে গেছে। সোমবার এক লাইভ টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। এরদোগান বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমি বলতে পারি মিয়ানমারে যা ঘটছে সে সম্পর্কে বিশ্ব আজ অন্ধ ও বধির হয়ে গেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব এটি শুনতে পায় না এবং এটি দেখতে পায় না।’ বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ এই ঢলকে তিনি ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং আগামী মাসে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে বিষয়টি উত্থাপনের অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা কঠোরভাবে এই নির্যাতনের নিন্দা করি এবং আমরা জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা চাইব।’ এরদোগান সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য সব সময়ই তার সহমর্মিতা প্রকাশ করে আসছেন। বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের সমস্যা নিয়ে সরব ভূমিকা পালন করছেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের দুরবস্থা বিশ্ব অস্বীকার করতে পারে না : এমিনি এরদোগান
মো: আবদুস সালিম, ০৯ অক্টোবর ২০১৭
এমিনি এরদোগান। তুর্কিতে জন্মগ্রহণ করা এই নারী তুর্কির ফার্স্ট লেডি। রাজনীতির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ নানা ক্ষেত্রে গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। তার রাজনৈতিক দলের নাম জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি। মানুষের দুঃখ-কষ্ট, অভাব, নির্যাতন ইত্যাদি যেন এতটুকুও সইতে পারেন না এমিনি এরদোগান। বিশ্বের কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমনÑ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জাতিগত সঙ্কট ইত্যাদি দেখা দেয়া মাত্র সেসব জায়গায় দ্রুত ছুটে যান সমস্যাপীড়িতদের এ সংক্রান্ত সমস্যা লাঘবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের উদ্ধারকাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করার জন্য তাকে ‘নিশান-ই’ খেতাব দেয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের অবস্থা সরেজমিন দেখার জন্য পরিভ্রমণ করেন এবং নিজ উদ্যোগে তহবিল সংগ্রহ করেন। তা বিশ্বে দারুণ প্রশংসিত হয়। সম্প্রতি তিনি সরেজমিন দেখে যান বাংলাদেশে চলে আসা (জীবন বাঁচাতে) রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুঃখ-দুর্দশা। তা দেখে তিনি যেমন মর্মাহত হন তেমনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন মিয়ানমারের প্রতি।
রোহিঙ্গাদের নানাভাবে সহযোগিতা করতে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোগান বিশ্বনেতাদের স্ত্রীদের কাছে চিঠি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় করার জন্য। তিনি বাংলাদেশের কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেন। রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে মর্মাহত হয়ে সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ওই সব চিঠিতে। চিঠিতে বিশ্বের শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। ফার্স্ট লেডি বলেছেন, ‘চলমান এই মানবিক সঙ্কটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের কানে তুলা দিয়েছে, যা বড়ই লজ্জার বিষয়। এটি কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। এমনকি তারা তা দেখেও না দেখার মতো আচরণ করছে।’ তিনি আশ্রয়শিবিরে থাকা নারীদের নিদারুণ দুঃখের কথা শোনেন। তিনি শোনেন, তারা বাস্তুচ্যুত হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। অনেকে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গণহত্যা বা হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। স্বামী ও সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে অনেকের চোখের সামনে। অগণিত মানুষের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমি কখনো ভুলতে পারব না ওই নারী ও শিশুদের দুঃখ-কষ্টের কথা ও তাদের করুণ চাহনি। এসব দেখে ফার্স্টলেডি প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গাশিবিরে ত্রাণসহায়তা পাঠিয়েছেন প্রায় এক হাজার টন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণার লঙ্ঘন করেছে মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সহিংসতা। এ অবস্থায় আমাদের উচিত এমন একটি বিশ্ব গড়ে তোলা, যেখানে থাকবে না কোনো জাতিগত বা ধর্মীয় বৈষম্য। তিনি আশা করেন, এ ব্যাপারে বিশ্বনেতারা এগিয়ে আসবেন। এসব ভেবে তিনি নিজ হাতে ত্রাণ বিতরণ করেন শিবিরে। তিনি বলেন, তুরস্কের পক্ষ থেকে এর আগেও রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুঃখ-দুর্দশার সময় তাদের পাশে থেকেছি, এখনো আছি, ভবিষ্যতেও থাকব।
ফার্স্ট লেডি এমিনি বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা প্রাচীন আদিবাসী। বর্তমানে রাষ্ট্রহীন। এর প্রতিরোধে ও একটি জাতিকে ‘নির্মূল’ থেকে রক্ষার্থে তুরস্ক কূটনৈতিক ও মানবিক সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের দুরবস্থা এখনই সৃষ্টি হয়নি। ১৯৭৮ সালে নাগরিকত্ব আইন সৃষ্টির পরই এই সঙ্ঘবদ্ধ গোষ্ঠী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা, কোনো কার্যালয় খোলা এমনকি মানবাধিকার থেকেও বঞ্চিত। তার মতো করে মানবাধিকার সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণকে ‘রোহিঙ্গা সম্প্রায়ের নির্মূল’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। সরকারগুলোর উচিত এ ব্যাপারে সাড়া দেয়া।
সার কথা হলো, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অধিকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ মানে, আন্তর্জাতিক, সাম্প্রদায়িক, জাতীয়, ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘুদের অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক। এই করুণ অবস্থা থেকে উঠে আসতে শুধু আরাকানের মুসলমানদের নয়, সারা মুসিলম জাহানকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বলেও মনে করেন ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোগান। ফলে আবার স্বাভাবিক হবে মৃত্যুপুরী আরাকান। বছরখানেক আগে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ক্রেনস মনটানা ফোরাম এমিনিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘প্রিক্স ডে লা ফাউন্ডেশন’-এ ভূষিত করে। তাকে সামাজিক কাজের মধ্যেও দেখা যায়। বাল্যবিয়ের ঘোর বিরোধিতা করেন। প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, কোনো অবস্থাতেই বাল্যবিয়ে মেনে নেয়া যায় না। এমিনি যে বক্তৃতা দেন তার উল্লেখযোগ্য দিকগুলো নানা মাধ্যমে প্রকাশ পায়। তা দেখেশুনে মানুষ তার ডাকে সাড়া দেয়। এমিনি বলেন, তারা সাড়া দেয় বলেই আমি এসব কাজে যারপরনাই বেশি মনোবল পাই। তুর্কির ফার্স্ট লেডি অন্তঃপুর বা হেরেমের প্রশংসা করে বলেন, হেরেম হচ্ছে নারীদের জীবনের ভালো দিকগুলোর প্রস্তুতির ক্ষেত্র। এসব কথা তিনি বলেন, রাজধানী আঙ্কারায় অটোমান সুলতানের সাম্রাজ্যে গিয়েও। ফলে ব্যাপক প্রশংসা পান। হেরেম সম্বন্ধে তিনি আরো বলেন, অটোমান সাম্রাজ্যের সদস্যদের জন্য হেরেম রীতিমতো একটি শিক্ষালয়। তুর্কির এই ফার্স্ট লেডির আরেক নাম এইচ ই মিসেস এমিনি এরদোগান। জন্ম তুর্কির ইস্তাম্বুলের অসকুদারে ১৯৫৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারিতে। জনহিতকর কাজের পাশাপাশি সহিষ্ণু ইসলামিক চর্চাও তিনি করেন। ভর্তি হন মিথার্ট পান্থা আর্ট স্কুলে। কিন্তু গ্র্যাজুয়েশন করার আগেই সেই স্থান ছেড়ে যেতে হয়। একসময় তিনি আইডিয়ালিস্ট উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশন্স নামক প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। ইসলামি রাজনীতির উন্নয়নেও তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.