এবিএনএ : সুতি শাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির ঐতিহ্য। পয়লা বৈশাখের এত রঙিন পোশাকের আয়োজনের মধ্যে এতটুকু কমেনি সুতি শাড়ির আবেদন। বরং কপালে টিপ, চুলের বাঁধনে ফুলের বাহার আর হাতভর্তি রঙিন চুড়ি—চিরায়ত বাঙালির এই সাজে সুতি শাড়িই যেন বেশি মানায়। এই পোশাকটাই যেন এদিন ছড়িয়ে দেয় ষোলো আনা বৈশাখী বার্তা।
এক প্যাঁচের শাড়ি সাজে আনে ভিন্নতা। আবার এক শািড়তে কুচি, আরেক শাড়িকে আঁচল হিসেবেও ব্যবহার করা যায় শাড়ি: যাত্রা, অরণ্য ও কুমুদিনী·সুতির শাড়িতে প্রাকৃতিক রং। শাড়ি: অরণ্যপয়লা বৈশাখে সুতি শাড়ি পরার চলটা শুরু হয় আশির দশকে। এর আগে বৈশাখী সাজে পরা হতো মূলত লাল পাড় সাদা জমিনের গরদের শাড়ি। আশির দশকে ঢাকার বেইলি রোডে দু-তিনটি দেশীয় বুটিক হাউস বাজারে আনতে শুরু করে টাঙ্গাইলের সুতি শাড়ি। টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের মনিরা ইমদাদ জানালেন, তখন বর্ষবরণে নতুন পোশাক পরার চল তেমন একটা ছিল না। পয়লা বৈশাখ নয়, বরং গরমকে মাথায় রেখে করা হতো শাড়ির নকশা। আর সেই শাড়িগুলোই বেশ চলত পয়লা বৈশাখে। সারা দিনের ঘোরাঘুরির জন্য সুতি কাপড় আরামদায়ক আবার দামটাও ছিল সাধ্যের মধ্যে। এভাবে ধীরে ধীরে সুতি শাড়ি পরাটা গ্রহণযোগ্যতা পায় পয়লা বৈশাখে।
বড় বড় বুটিক হাউসগুলো তো আছেই, সুতি শাড়ির একটা বড় বাজার রাজধানীর বেইলি রোড ও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট। দোকান ঘুরে দেখা গেল, এবারের বৈশাখে সুতি শাড়িতে দেখা যাবে কুচির কাজ। অর্থাৎ শাড়িটা হয়তো একরঙা, কুচিতে থাকবে নানা রঙের সমাহার। আবার বিপরীত নকশার শাড়িও দেখা যাচ্ছে। দোকানে দোকানে এরই মধ্যে চলে এসেছে উৎসবের শাড়ি। আঁচল ও জমিনে থাকছে উজ্জ্বল রঙের ব্লকপ্রিন্ট, সাদা বা লাল যেকোনো একটিতে রাঙানো থাকছে কুচি। দোকানিরা জানালেন, ৫০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে পছন্দের শাড়িটি পেয়ে যাবেন ক্রেতারা।
বৈশাখে সাদা শাড়িতে লাল পাড়ের আবেদন সব সময়ই থাকবে·লাল-সাদা রঙের পাশাপাশি শাড়িতে এবার থাকবে নীল রঙও। শাড়ি: ড্রেসিডেলমসলিন, জামদানি ও হাফসিল্কের শাড়ি নিয়েও কাজ হচ্ছে বেশ। তবে সেখানেও থাকছে সুতির সংমিশ্রণ। যেমন জমিনটা সিল্ক, আঁচলটা সুতি—এমন নকশার বুননেও তৈরি হচ্ছে। শাড়ি বিশেষজ্ঞরা জানালেন, লোকজ মোটিফ আর রঙের মেলা—এই দুয়ের সমন্বয় বেশি ফুটে উঠবে সুতি শাড়িতেই। তাই এবার বৈশাখের সুতি শাড়িতে থাকবে এমন নানা নিরীক্ষাধর্মী কাজ। পুরো শাড়িতে নয়, বরং পাড়, আঁচল, কুঁচি, জমিন—শাড়ির নানা অংশে প্রাধান্য পাবে আলাদা নকশা। ওটুর ডিজাইনার সৈয়দ রুমানা হক জানালেন, শাড়ির আঁচলটা সাদা হলে কুঁচির নকশায় থাকবে উজ্জ্বল রঙের দেশি ফুলের মোটিফ। শাড়িতে উৎসবের আবহ আনতে কনট্রাস্ট পাড়ের ওপর থাকবে জরির কাজ। আবার কোনো কোনো শাড়ির আঁচলে থাকবে রঙিন ফুলেল নকশা।
·শাড়িতে ফুলেল ছাপা এবার চলবে বেশি। শাড়ি: ওটুবরাবরের মতোই থাকবে ব্লকপ্রিন্ট, বাটিক, হাতের কাজ। পরিবর্তন থাকবে পাড়ের নকশায়। ড্রেসিডেলের ডিজাইনার মায়া রহমান জানালেন, ‘শাড়ির নিচের পাড়টা মোটা থাকলে ওপরের দিকে (ব্লাউজের সামনে) তা সরু হয়ে আসবে। শাড়ির মতো ব্লাউজের নকশায়ও থাকবে উৎসবের আমেজ। ভারী কাজের পাড়ে যাতে ব্লাউজের নকশা হারিয়ে না যায়, সে জন্যই ওপরে থাকবে সরু পাড়।’ কোনো কোনো সুতির শাড়ির বুননেই থাকছে পাড়। আবার আলাদা কাপড়ে নকশা করে পাড় বানিয়ে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে পুরো শাড়িতে।
বরাবরের মতোই লোকজ মোটিফ থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে শাড়ির জমিনের নকশা। কে-ক্র্যাফটের শাড়িতে থাকছে সাঁওতালদের ঘরের আলপনার নকশা, বিবিয়ানা বেছে নিয়েছে তাসের দেশ, রঙ বাংলাদেশের শাড়িতে থাকছে যামিনী রায়ের আঁকা ছবি, বিশ্ব রঙে থাকছে শখের হাঁড়ির রং, ড্রেসিডেল বেছে নিয়েছে ফুল ও গাছের নকশা।
এবার সুতি শাড়িতে লাল-সাদার পাশাপাশি প্রাধান্য পাবে অন্য রংগুলো। রঙ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস জানালেন, বৈশাখ মানেই রঙিন উৎসব। পয়লা বৈশাখে চারদিকজুড়ে যে রঙের মেলা দেখা যায় সেখান থেকেই নির্বাচন করা হয় শাড়ির রং। তবে যতই রঙের ব্যবহার থাকুক না কেন, শাড়িতে ব্যবহৃত রংগুলো যেন চোখধাঁধানো না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার কথা জানালেন সৌমিক দাস। বরং পোশাকের উজ্জ্বল রঙে যদি থাকে স্নিগ্ধ নকশা, চোখ ও মন দুটোই আরাম পাবে গরমে।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.