এবিএনএ : আফগানিস্তানে তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করার চেয়ে নিজের দেশে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা বেশি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধের সমাপ্তি টানার সময় এসেছে। সেনাদের ঘরে ফিরেয়ে আনার সময় এসেছে।’ এর আগে আফগানিস্তানের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাইডেন। গত মঙ্গলবার আফগান ভূখন্ড থেকে নিজ দেশে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আগামী ১১ সেপ্টম্বরের মধ্যে দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে।’ আফগানদের বিপক্ষে যুদ্ধটিকে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম যুদ্ধ বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
২০০১ সালে হোয়াইট হাউসে আফগান যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তখন বাইডেন ছিলেন সিনেটের প্রভাবশালী সদস্য। সিনেটর হিসেবে তিনি জর্জ বুশের আফগান যুদ্ধের অনুমোদন দেন। পরবর্তীতে বারাক ওবামার সময় ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বাইডেন। বারাক ওবামা তার সময় আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে চেয়েছিলেন। এ সময় বাইডেনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তার মতপার্থক্যও হয়। সেই সূত্রে আফগানিস্তানে যুদ্ধ বাদ দিয়ে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বারাক ওবামার সঙ্গে কথা বলে নেন।
গতকাল বুধবার বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে বিষয়টি নিয়ে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমেরিকার দীর্ঘতম লড়াই শেষ করার এটিই সময়। আগামী ১ মে থেকেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হবে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের আগেই শেষ মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছেড়ে আসবেন।’
হোয়াইট হাউসের ট্রিটি রুম থেকে দেওয়া ভাষণে বাইডেন জানান, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমাদের ওপর হামলা হয়েছিল। হামলার জবাব দিতে আমরা যুদ্ধে গিয়ে ছিলাম। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার কথা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল। হামলার নেপথ্য নায়ক ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়েছে। তালেবান সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবান শক্তিকে দুর্বল করা হয়েছে। এখান (ট্রিটি রুম) থেকেই দুই দশকের আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটবে।
তিনি বলেন, ‘আমি চতুর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা উপস্থিতি নিয়ে কথা বলছি। সমস্যাটিকে আমি আমার কোনো উত্তরসূরি প্রেসিডেন্টের জন্য রেখে যেতে চাই না। কোনো কিছু ভেঙে ফেলা সহজ। কিন্তু জোড়া লাগানো সব সময়ই কঠিন।’
শপথ গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা ফিরিয়ে আনা ও যুদ্ধের সমাপ্তি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর আগে অবশ্য আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে চেয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হয়েছিলেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময় তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন সমঝোতা হয়। তালেবানরা ট্রাম্পকে প্রতিশ্রুতি দেয়, সেনা প্রত্যাহার করা হলে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে তারা কোনো সংঘাতে যাবে না। ধারণা করা হচ্ছে, তালেবানদের এই গোপন সমঝোতার জের ধরেই সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
বিবিসি এও জানিয়েছে, একসময় ৯৩ হাজারের বেশি মার্কিন সেনার উপস্থিতি ছিল আফগানিস্তানে। বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা দেশটিতে অবস্থান করছে। সবাইকে একসঙ্গে প্রত্যাহার করা হবে না। তবে, এটি আগামী ১ মে থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ১১ সেপ্টম্বরের মধ্যে। মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য নিরাপত্তার জন্য ক্রমান্বয়ে সেনা প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে বুধবারই এক সংবাদ সম্মেলনে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, ‘সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন যুদ্ধের অবসান নয়, যুদ্ধকে আরও প্রলম্বিত করেছেন। তিনি একটি ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নিয়েছেন। কোনো পরিস্থিতিতেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত একদমই সঠিক হয়নি।’
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.