এবিএনএ : দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন রণতরীর সঙ্গে টক্কর দিতে চীন বানাচ্ছে অত্যন্ত শক্তিশালী তিন নম্বর এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার। ‘ক্যাটাপাল্ট’ প্রযুক্তিতে আমেরিকার ধাঁচে এসব এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার বানাচ্ছে চীন। প্রকৌশলের গুণগত মানে যা মার্কিন এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়।
চীনের নৌবাহিনীর হাতে আরও একটি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার এলে শুধু দক্ষিণ চীন সাগরই নয়, বৃহত্তর ভারত মহাসাগরেও চীনের আধিপত্য বিস্তার করাটা সহজতর হবে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। সে অর্থে, পুরোপুরি যুদ্ধে নেমেছে, এমন এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার এখনও পর্যন্ত একটিও নেই চীনের হাতে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ছিল ‘লিয়াওনিং’। তা জাতে এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার হলেও, সর্বাধুনিক সরঞ্জামের অভাবে সাবেক সোভিয়েত জমানায় ‘সাপোর্ট শিপ’ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার পর সেটি কিনে নিয়েছিল ইউক্রেন। তবে তা ধরে রাখতে পারেনি। চীনকে বেঁচে দিয়েছিল। তার পর উত্তর-পূর্ব দালিয়ান বন্দরে নিয়ে গিয়ে সেই ‘লিয়াওনিং’-কে সর্বাধুনিক করে তুলেছে চীন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেটিকে কোনও যুদ্ধে নামায়নি। তার পর আরও একটি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার বানিয়েছে চীন।
সেটিও নামেনি কোনও পুরোদস্তুর যুদ্ধে। ২০২০ সাল নাগাদ সেটি হাতে আসার কথা চীনা নৌবাহিনীর। যার ওজন প্রায় ৫০ হাজার টন। দু’নম্বর এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারটিকে (০০১এ) এখন প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় ‘লিয়াওনিং’-কে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ জানাচ্ছে, এখন তিন নম্বর এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারটিকে (০০২) বানানোর তোড়জোড়-প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। কাজ চলছে সাংহাই বন্দরে।
চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞ লি জি বলেছেন, ‘‘এই ০০২ মডেলের এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারটি মার্কিন ‘ক্যাটাপাল্ট’ প্রযুক্তিতে বানানো হলেও, তা ‘লিয়াওনিং’ এবং ‘০০১এ’ মডেলের এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারের থেকে একেবারেই আলাদা। আর তা দেখতে হবে অবিকল মার্কিন এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারের মতো। বেশির ভাগ সর্বাধুনিক এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার থেকে যুদ্ধবিমান ছোড়া হয় তড়িৎ-চুম্বকীয় (ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক) ক্যাটাপল্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে। কিন্তু স্টিম ক্যাটাপল্ট ব্যবস্থার মাধ্যমেও তা করা যায় কি না, আমরা তা পরখ করে দেখছি। ’’ মানে, শুধুই কাজকর্মে নয়, দর্শনেও রাশিয়ার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে পুরোদস্তুর মার্কিন হয়ে উঠছে তিন নম্বর চিনা এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার।
তবে চীনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিন নম্বর এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার বানিয়েই বেইজিং থামতে চায় না। তার লক্ষ্য, অন্তত ৫/৬টি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার বানানো।
কেন আরও এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার প্রয়োজন চীনা নৌবাহিনীর? এমন প্রশ্নের উত্তরে জানা যায়, চীনা সেনাবাহিনী ‘পিপল্স লিবারেশন আর্মি’র নেভি ইক্যুইপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট য়িন ঝুও বলেছেন, ‘‘সমুদ্রে কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে দু’টি আর ভারত মহাসাগরে দু’টি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার রাখা প্রয়োজন চীনা নৌবাহিনীর। তাই আমাদের হাতে ৫ থেকে ৬টি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার থাকাটা খুব প্রয়োজন। ’’
ঘটনা হল, চীন যে তিন নম্বর এয়ারক্র্যাফ ক্যারিয়ারটি বানাচ্ছে, তার কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল বেশ কিছু দিন আগেই। কিন্তু এত দিন এ ব্যাপারে চীনা সংবাদমাধ্যম মুখে কুলুপ এঁটেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘শত্রু’ আমেরিকাই এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছে চীনকে। গত রবিবার আমেরিকা জানায় দক্ষিণ চীন সাগরে ‘রুটিন অপারেশন’ শুরু করেছে মার্কিন ‘এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ’। চীন কয়েক দিন আগেই বলে দিয়েছিল, দক্ষিণ চীন সাগরে যেন অযথা নাক না গলায় আমেরিকা। যেন চীনের সার্বভৌমত্বে হাত না পড়ে! তার পরেও এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার নিয়ে আমেরিকার ঘোষণাই সম্ভবত চীনকে সরকারি ভাবে মুখ খুলতে উৎসাহিত করল। দক্ষিণ চীন সাগরকে অনেক দিন ধরেই তার ‘নিজের এলাকা’ বলে দাবি করে আসছে চীন। আর ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ব্রুনেইয়ের মতো দেশগুলি তা কিছুতেই মানতে না চাওয়ায় দক্ষিণ চীন সাগর একটি ‘বিতর্কিত এলাকা’ হয়ে উঠেছে। চীন ইতিমধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরে একটি কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জও বানিয়ে ফেলেছে।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.