নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের ভেতরে বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাস বসিয়ে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন। আদালতে তিনি বলেন, এই আদালত চলতে পারে না। এখানে ন্যায়বিচার নেই। যা ইচ্ছা তাই সাজা দিতে পারেন। খালেদা জিয়া বলেন, যত ইচ্ছা সাজা দিতে পারেন। আমি অসুস্থ। আমি বারবার আদালতে আসতে পারব না। আর এভাবে বসে থাকলে আমার পা ফুলে যাবে। তিনি বলেন, আমার সিনিয়র কোনো আইনজীবী আসেনি। এটি জানলে আমি আসতাম না।আদালতের বিচারক ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। বেলা ১১টার দিকে তিনি আদালতে আসেন। খালেদা জিয়াকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়। হুইলচেয়ারে বসিয়ে তাকে আনা হয়। পরনে ছিল বেগুনি রঙের শাড়ি। চেয়ারে বসা অবস্থায় তার পায়ের ওপরের অংশ থেকে নিচ পর্যন্ত সাদা চাদর দিয়ে ঢাকা ছিল। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অনুপস্থিতিতে বুধবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে নতুন এ এজলাসে বিচার কার্যক্রম শুরুর পর খালেদা জিয়া নিজের অসুস্থতার কথা তুলে ধরে বিচারককে বলেন, আপনার যতদিন ইচ্ছা সাজা দিন, আমি এ অবস্থায় আসতে পারব না। আধা ঘণ্টারও কম সময় আদালতের কার্যক্রম চলার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা না থাকায় শুনানি মুলতবি করে আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান। আদালতকে খালেদা জিয়া বলেন, এখানে বিচার পাওয়া যাবে না। তাকে জেলে রাখতেই এ আয়োজন করা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তার আইনজীবীদের আসতে দেয়া হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার শুনানি এতদিন চলছিল কারাগারের কয়েকশ গজ দূরে বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন কারা অধিদফতরের মাঠে বিশেষ এজলাসে। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত ঘোষণা করে সেখানেই দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার শুনানি করার নির্দেশ দেয়। এ কারাগারেই আরেকটি ভবনের দোতলার একটি কক্ষে গত সাত মাস ধরে বন্দি রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এতিমখানা দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি একই বিচারক তাকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। আদালতে এসেছিলেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তাফা খান। বিএনপিপন্থী এই আইনজীবী আদালতে খালেদা জিয়ার কোনো আইনজীবী দেখতে না পেয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, আমি এখানে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে এসেছি। খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনা করেন, এমন কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হননি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী কারাগারে আদালত বসবেন— এ ধরনের প্রজ্ঞাপন গত রাতে আসামিপক্ষের এক আইনজীবীর কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এটি যথাযথভাবে আসামিপক্ষকে জানানো হয়নি। তাই আদালতকে সার্বিক বিবেচনায় নতুন তারিখ ধার্য করতে অনুরোধ জানান তিনি। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, আজ এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হয়। এর পর থেকে অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে এখন পর্যন্ত আদালতে হাজির করা যায়নি। তার অসুস্থতা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কারাগারে আদালত বসানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনটি যথাযথভাবে আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়াকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আর অন্য আইনজীবীদের ব্যক্তিগতভাবে আজকের শুনানির বিষয়ে জানানো হয়েছে। এমনকি বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন অস্থায়ী আদালত যেখানে বসত, সেখানেও তা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। এর পর তিনি আদালতের কার্যক্রম শুরুর আরজি জানান। আদালত থেকে যাওয়ার সময় খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার কোনো সিনিয়র আইনজীবী আদালতে ছিল না। তাদের যথাযথভাবে নোটিশ দেয়া হয়নি। যে প্রজ্ঞাপন গত রাতে করা হয়েছে, তা সাত দিন আগে কেন করা হয়নি। আদালতকে জানিয়েছি- আমি অসুস্থ, বারবার আসতে পারব না।
Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali,Managing Editor : Khondoker Niaz Ikbal,
Executive Editor : Mehedi Hasan,E-mail : abnanewsali@gmail.com
Usa Office: 2817 Fairmount, Avenue Atlantic city-08401,NJ, USA. Bangladesh Office : 15/9 Guptopara,Shemulbag,
2 nd floor,GS Tola, Teguriha, South Keraniganj, Dhaka.
Phone: +16094649559, Cell:+8801978-102344, +8801715-864295
Copyright © 2025 America Bangladesh News Agency. All rights reserved.