এ বি এন এ : যুগ যত এগোচ্ছে মানুষ তো আকাশ ছুঁতে চেষ্টা করছে। একের পর এক গগণচুম্বি অট্টালিকা তৈরি হচ্ছে বিশ্বের বহু জায়গায়। বিশ্বে গত দশ বছরে বহুতলের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বহুতল যত বাড়ছে লিফট বা এলিভেটর প্রযুক্তি তত উন্নত হচ্ছে। এখন বেশিরভাগ লিফটটেই আয়না দেওয়া থাকে। ব্যাপারটা হয়তো আপনি খেয়ালও করেছেন। কিন্তু কেন জানেন কী! লিফটের গতি প্রথম প্রথম বেশ ধীর ছিল। লিফটের চেয়ে হেঁটে আগে চলে যাওয়া যেত। পরে ইঞ্জিনিয়াররা গতি বাড়ালেন, কিন্তু অভিযোগ মিটল না। অনেকেই বললেন, কই জোর কই! তখন ইঞ্জিনিয়াররা বোঝালেন, এর চেয়ে বেশি গতির লিফট চালাতে হলে বিপুল খরচ হবে, কারণ যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে তা বেশ ব্যয়সাধ্য। এরপরই ডিজাইনাইরা এই সমস্যা নিয়ে অনেকের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন। সার্ভে করে দেখলেন লিফটে যারা চড়ছেন তারা ভিতরে থাকা অবস্থায় ভাবছেন ধীরগতিতে চলছে। আসলে লিফটটা যতটা ধীরে চলছে, তার চেয়ে বেশি ধীরে মনে হচ্ছে লিফটের ভিতরে চড়লে। ব্যাপরটা অনেকটাই মানসিক। মনোবিদরা বলবেন, আসলে লিফটের ভিতর যাত্রীরা কিছুই করতে পারছেন না। দেওয়ালের দিকে বাধ্য হয়ে চেয়ে থেকে বোর হচ্ছেন। কোন ধারণাও পাওয়া যাচ্ছে না গন্তব্য কতক্ষণ চলবে। এতেই মনে হচ্ছে লিফটটা ধীরগতিতে চলছে। এরপর উপায় বের হল। মনোবিদদের কথা মেনে লিফটে লাগানো হল আয়না। আয়না থাকলে নিজেকে দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকে। সময় কেটে যায়। আয়নায় ভাবনা আসে। লিফটের সময়টা বোরিং কাটে না। রিসার্চে দেখা গেছে, আয়না দেওয়ার পর নাকি অনেকেই বলেছেন, লিফটের গতি বেড়েছে। তবে এটার পিছনে বিজ্ঞান কতটা আছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। অনেকে বলেন, লিফটে আয়না লাগিয়ে যাত্রী বা আরোহীদের মনটাকে একটু ব্যস্ত রাখা। কারণ ওপরের দিকে ওঠাটা সব সময়ই শরীরের পক্ষে অস্বস্তিকর। আরও একটা কারণ রয়েছে। ক্লাসট্রোফোবিয়া বা Claustrophobia ভোগা মানুষদের জন্যও এই আয়না রাখাটা খুব কাজের। ক্লাসট্রোফোবিয়া হল ছোট জায়গায় থাকার ভয়, তাদের ভয় লাগে তারা বোধহয় জায়গাটা ছেড়ে আর বের হতে পারবে না। বদ্ধ জায়গায় অনেকেরই দম বন্ধের মতো লাগে। ফলে আয়না লাগালে স্বাভাবিকভাবেই মনে হয় জায়গাটা অনেকেটা বেড়েছে।