এবিএনএ: পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাব ও এর কর্মকর্তাদের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিকে বাংলাদেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের একটি ‘চাপ সৃষ্টি’র কৌশল হিসেবে দেখছেন একজন বিশ্লেষক। রোববার (১২ ডিসেম্বর) বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের স্কুল অফ সিকিউরিটি অ্যান্ড গ্লোবাল স্টাডিজের অধ্যাপক সায়ীদ ইফতেখার আহমেদ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলের পেছনে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক, কোয়াড নামের এক মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে বাংলাদেশের যোগ না দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণ হয়েছে।
এদিকে র্যা ব ও এর ছয়জন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কি ধরনের প্রভাব পড়তে পারে অনেকেই সেই প্রশ্ন তুলছেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্য, সম্পর্কে প্রভাব পড়বে কি না, সেটা “ডিপেন্ডস অন ইউএসএ”, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভর করে। কিন্তু ইফতেখার আহমেদ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এরই মধ্যে দুদেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি যদি আগামীতে চীন ও রাশিয়ার দিকে আরও ঝুঁকে পড়ে তাহলে ‘ভবিষ্যতে আরও কিছু মার্কিন নিষেধাজ্ঞার’ মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইফতেখার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পুরো বিষয়টি নির্ভর করবে আগামীতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির কার্যক্রমের উপর’।
বাংলাদেশের কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ও তার কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনা এটাই প্রথম। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞার কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বাংলাদেশ। দেশটির রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
মার্কিন এই নিষেধাজ্ঞাকে শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ‘লোক দেখানো অপচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইফতেখার আহমেদ বিবিসিকে বলেন, এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলের একটি বড় কারণ হতে পারে বাংলাদেশের সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ক। এছাড়া বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করেন ইফতেখার আহমেদ। কিন্তু তা হঠাৎ করে ঘটেনি বলেই তার অভিমত। তাছাড়া ওবামা প্রশাসনের সময় বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গে এক ধরনের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।