এ বি এন এ : ব্রাজিলের অপসারিত প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার পক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটির সিনেট। বুধবার সিনেটের ৮০ সদস্যের ৫৯ জন বিচারের পক্ষে এবং ২১ জন বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
মে মাসে সিনেটের ভোটে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারিত হন ব্রাজিলের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট রুসেফ। রাষ্ট্রীয় অর্থ দলীয় প্রচারকাজে ব্যয় এবং ভোটের আগে জনগণকে প্রভাবিত করতে বাজেট আইন অমান্য করে বেশি বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগে সিনেটে অভিশংসিত হন তিনি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পাল্টা অভিযোগ করেন রুসেফ।
অভিশংসনে অপসারিত রুসেফের বিরুদ্ধে বিচার হবে কি হবে না, তা নিয়ে সিনেটে বিতর্ক শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু করতে সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের অনুমোদন দরকার ছিল, যা সহজেই মীমাংসা হয়েছে।
চারটি অভিযোগে রুসেফের বিরুদ্ধে বিচার হবে। একে বলা হচ্ছে ‘অভিশংসন বিচার’। অভিশংসনের পরও সিনেট যদি তার বিরুদ্ধে বিচার শুরুর অনুমোদন না দিত, তাহলে তিনি আবার ক্ষমতা ফিরে পেতেন। এখন রুসেফের বিরুদ্ধে শেষ সুযোগ বিচারের মুখোমুখি হয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করা। যদি তা সম্ভব হয়, তবেই তিনি আবার প্রেসিডেন্ট পদ ফিরে পাবেন।
ব্রাসিলিয়ায় মঙ্গলবার সিনেটে বিতর্ক শুরু হয়ে শেষ হয় বুধবার সকালে। বিতর্ক শুরুর আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট রিকার্ডো লেওয়ানডস্কি সিনেটরদের উদ্দেশে বলেন, ‘সংবিধানের অধীনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে বসতে যাচ্ছেন আপনারা।’
২৫ আগস্ট থেকে রুসেফের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে, চলবে পাঁচদিন। শেষ দিনে সিনেটের ভোটে চূড়ান্ত হবে রায়। এ ভোট বলা হচ্ছে, ‘জাজমেন্ট ভোট’।
জাজমেন্ট ভোটে রুসেফ হেরে গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের পদ হারাবেন তিনি। ১২ মে অভিশংসিত হয়ে ক্ষমতা হরানোর পর প্রেসিডেন্ট পদে বসা তার প্রাক্তন রানিংমেট মাইকেল তেমের আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদে বসবেন। ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।
মাইকেল তেমের ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু হলে তিনি রুসেফের বিরুদ্ধে চলে যান। এখন দ্রুত বিচার শেষ করার জন্য তিনি সিনেটের ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন। তিনি বলেছেন, ‘জনগণ জানতে চায়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট আসলে কে?’
এদিকে ২০১৪ সালে ফুটবল বিশ্বকাপ আসরের উদ্বোধন করলেও রিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী মঞ্চে রাখা হয়নি রুসেফকে। তাকে দর্শকসারিতে স্থান দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন মাইকেল তেমের।