আমেরিকালিড নিউজ

নিউ ইয়র্কে বোমা হামলায় অভিযুক্ত বাংলাদেশের আকায়েদ

এবিএনএ : নিউ ইয়র্কের বাস টার্মিনালে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের চেষ্টার সময় আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক আকায়েদ উল্লাহর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ এনে চার্জশিট দাখিল করেছে গ্র্যান্ড জুরি। তার বিরুদ্ধে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা, ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার, জনসমাগমস্থল ও পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থায় সন্ত্রাসী হামলা ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সম্পদের ক্ষতি করার চেষ্টাসহ ৬ দফা অভিযোগ তোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার  বিকেলে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর রাত) ফেডারেল জজ রিচার্ড জে সুলিভানের এজলাসে আকায়েদকে হাজির করার কথা।

স্থানীয় সময় বুধবার ম্যানহাটনের ফেডারেল কোর্টে গ্র্যান্ড জুরির সামনে আকায়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র পেশ করেন প্রসিকিউটররা। এর পরই জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সহকারি এটর্নি জেনারেল ডানা জে বয়েন্টে এবং নিউইয়র্ক সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস এটর্নি জিয়োফ্রে এস বারমেন প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন।

উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর সকালে প্রতিদিনের মতো ব্যস্ততা ছিল শহর। অফিসগামী যাত্রীদের ভীড়ে টাইম স্কয়ার সাবওয়ে স্টেশন থেকে ম্যানহাটনের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে যাওয়ার ভূগর্ভস্থ পথে বিস্ফোরণ ঘটান আকায়েদ। তিনি নিজের শরীরে ‘পাইপ বোমা’ বেঁধে নিয়েছিলেন। কিন্তু বোমাটি ঠিকমত বিস্ফোরিত হয়নি। এতে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তবে গুরুতর আহত হয়েছেন। আতহ অবস্থায় পুলিশ তাকে আটক করে। এ বিস্ফোরণে আহত হয়েছিলেন আরো তিন পুলিশ সদস্য। পরে নিউ ইয়র্ক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে এ হামলা চালান।

চার্জশিটে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে সারাজীবন তাকে জেলে কাটাতে হবে বলেও জানিয়েছেন ইউএস এটর্নিরা। সেখানে আরো বলা হয়, ২০১৪ সালে ইন্টারনেটে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন প্রচার তাকে প্রভাবিত করে। এসব দেখেই উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকতে থাকেন আকায়েদ। আর তিনি হামলা করেন জেরুজালেম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ থেকে। ব্রুকলিনের বাসা থেকে পাইপ বোমা তৈরির যাবতীয় সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। হামলার আগে আকায়েদ ফেইসবুকে এক পোস্ট দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।

বৃহস্পতিবার  বিকেলে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর রাত) ফেডারেল জজ রিচার্ড জে সুলিভানের এজলাসে আকায়েদকে হাজির করার কথা। উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর হাসপাতাল থেকেই ভিডিও কনফারেন্সে আকায়েদের বক্তব্য শোনেন ম্যানহাটনের ফেডারেল কোর্টের বিচারক ক্যাথারিন এইচ পারকার।

আকায়েদের বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি ঢাকার হাজারিবাগে বড় হয়েছেন। ৬ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর কখনও ট্যাক্সি ড্রাইভিং আবার কখনও ইলেকট্রিক কন্ট্রাক্টরের অধীনে কাজ করেন। বাস করতেন ব্রুকলীনে মা-বোনদের সাথে। সে বাসাতেই তৈরি করেন পাইপ বোমা। তার ছয় মাস বয়সী সন্তান নিয়ে তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস থাকেন ঢাকায়। ঢাকার জিগাতলার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গত ডিসেম্বরে আকায়েদের স্ত্রী এবং তার বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাংলাদেশের পুলিশ।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সে সময় জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে আকায়েদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কোনো রেকর্ড নেই। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতারও তথ্য মেলেনি। তবে তার শ্বশুর-শাশুড়ি এবং স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বোঝা গেছে, আকায়েদ আইএস এর প্রচারণায় নিজে থেকেই এপথে যেতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button