আইন ও আদালতলিড নিউজ

ডা. সাবরিনা ৩ দিনের রিমান্ডে

এবিএনএ : করোনাভাইরাস পরীক্ষায় জালিয়াতি করার অভিযোগে গ্রেফতার জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ও  জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। সোমবার সকালে ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে চার দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রোববার দুপুরে সাবরিনাকে হাসপাতাল থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তেজগাঁও থানার এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই দিনই জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে তাকে বরখাস্ত করার অফিস আদেশ জারি করা হয়।

সম্প্রতি জেকেজি’র ব্যাপারে বিশদ তদন্ত করতে গিয়েই উঠে আসে ডা. সাবরিনা ও তার প্রতারক স্বামী আরিফ চৌধুরীর নাম। তদন্ত করে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে কোনো পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে করোনার টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করেছে। একটি ল্যাপটপ থেকে গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার ফ্লোর থেকে এই মনগড়া করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠায় তারা।

প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় থেকে জব্দ ল্যাপটপ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করোনা টেস্ট জালিয়াতির এমন চমকপ্রদ তথ্য মেলে। এতে দেখা গেছে, টেস্টের জন্য জনপ্রতি নেওয়া হয় সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। বিদেশি নাগরিকদের কাছে জনপ্রতি একশ’ ডলার। এ হিসাবে করোনার টেস্ট বাণিজ্য করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে সাত কোটি ৭০ লাখ টাকা।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত সাবরিনার হাত ধরেই করোনার স্যাম্পল কালেকশনের কাজটি ভাগিয়ে নেয় অনেকটা অখ্যাত জেকেজি নামে এই প্রতিষ্ঠান। প্রথমে তিতুমীর কলেজে মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার অন্য এলাকা আর অনেক জেলা থেকেও নমুনা সংগ্রহ করছিলেন তারা।

গত ২৪ জুন জেকেজির গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে আরিফসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। দু’জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জেকেজির কার্যালয় থেকে ল্যাপটপসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি ছিল জেকেজির। পরে ওই চুক্তি বাতিল করা হয়।

এ ঘটনায় গত কয়েক দিনে নানা সংবাদ প্রকাশ ও আলোচনার পর রোববার দুপুরে ডা. সাবরিনাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ জানান। এর ঘণ্টাখানেক পর তাকে বরখাস্তের অফিস আদেশ জারি করা হয়।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button