বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র কার হাতে? অবাক করা তথ্য প্রকাশ
রাশিয়া এগিয়ে, দ্রুত বাড়ছে চীনের ভাণ্ডার—বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক শক্তির নতুন প্রতিযোগিতা


এবিএনএ: বিশ্বজুড়ে আবারও বাড়ছে পারমাণবিক উত্তেজনা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা—আসলে কোন দেশের হাতে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র?
আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পৃথিবীতে মোট নয়টি দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে—রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও ইসরায়েল। এর মধ্যে পারমাণবিক শক্তিতে সবচেয়ে এগিয়ে রাশিয়া।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার হাতে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৩০৯টি ওয়ারহেড। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের ওয়ারহেড সংখ্যা ৩ হাজার ৭০০। এরপর চীন (৬০০), ফ্রান্স (২৯০), যুক্তরাজ্য (২২৫), ভারত (১৮০), পাকিস্তান (১৭০), ইসরায়েল (৯০) ও উত্তর কোরিয়া (৫০)।
এসআইপিআরআই জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে চীনের পারমাণবিক ভাণ্ডার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে প্রতিবছর দেশটি গড়ে ১০০টির বেশি নতুন ওয়ারহেড তৈরি করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পেন্টাগন অনুমান করছে, ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের হাতে থাকবে অন্তত ১ হাজার পারমাণবিক অস্ত্র।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া পুরোনো কিছু ওয়ারহেড সাময়িকভাবে সরিয়ে ফেললেও, সেগুলো এখনো পুনরায় সচল করা সম্ভব বলে জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক ‘ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস’।
গত সপ্তাহে রাশিয়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে, যা পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এমনকি পানির নিচে চলা এক ড্রোনও পরীক্ষা করেছে দেশটি, যা উপকূলীয় শহরে তেজস্ক্রিয় সুনামি তৈরি করতে পারে। পুতিনের দাবি, এই ড্রোন শনাক্ত বা প্রতিরোধ করা কার্যত অসম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট জানিয়েছেন, আমেরিকার পরীক্ষাগুলো পারমাণবিক বিস্ফোরণ নয়, বরং অস্ত্রের প্রযুক্তিগত কার্যকারিতা যাচাইয়ের অংশ। তিনি বলেন, “এগুলোকে আমরা বলি ‘নন-ক্রিটিক্যাল এক্সপ্লোশন’, অর্থাৎ যেখানে প্রকৃত পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া ঘটানো হয় না।”
এই মুহূর্তে বিশ্ব যেন আবারও ঠান্ডা যুদ্ধের ছায়ায় দাঁড়িয়ে—যেখানে পারমাণবিক শক্তির প্রতিযোগিতা এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে।




