আমেরিকা

ব্রিকসে যোগ দিলে অতিরিক্ত ১০% শুল্ক: আমেরিকাবিরোধী নীতির অভিযোগে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

ব্রিকস সম্প্রসারণকে ‘আমেরিকার স্বার্থবিরোধী’ দাবি করে সদস্য দেশগুলোর ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

এবিএনএ: বিশ্ব রাজনীতির উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিকস জোটে যুক্ত হওয়া দেশগুলোর প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন—যে কোনো দেশ যদি ‘আমেরিকাবিরোধী’ নীতির অংশ হিসেবে ব্রিকসে যোগ দেয়, তাহলে তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে।

সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন,
“যে কোনো দেশ ব্রিকসের আমেরিকাবিরোধী নীতিতে অংশ নেবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে চাইলে বাড়তি ১০% শুল্ক গুণতে হবে। কোনও ব্যতিক্রম থাকবে না।”

যদিও ট্রাম্প তার পোস্টে স্পষ্ট করে বলেননি, তিনি ব্রিকসের কোন নীতিকে ‘অ্যান্টি-আমেরিকান’ বলে চিহ্নিত করছেন। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্প্রতি ব্রিকসের বিস্তৃতি ও মার্কিন ডলারের বিকল্প মুদ্রা ব্যবহার কিংবা জ্বালানি বাণিজ্যে ডলার নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগই হয়তো ট্রাম্পের উদ্বেগের কারণ।

ব্রিকস কী ও কেন বিতর্কে?

২০০৯ সালে গঠিত ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) সম্প্রতি আরও ছয়টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে—মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইন্দোনেশিয়া। এই সম্প্রসারণকে বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বিকল্প জোট গঠনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন অনেকেই।

বিশেষ করে রাশিয়া-চীন নেতৃত্বাধীন এই জোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় মার্কিন আধিপত্য কমাতে কাজ করছে বলে ধারণা করা হয়। ফলে ট্রাম্পের এই হুমকি মূলত ব্রিকসের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধেই একটি কৌশলগত অবস্থান বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরপরই বিশ্বব্যাপী আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো এবং সম্ভাব্য নতুন সদস্য রাষ্ট্রগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কীভাবে বজায় রাখবে—তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর আবার ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প যদি কঠোর বাণিজ্যনীতি কার্যকর করেন, তাহলে এটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

শেষ কথা:
ব্রিকস জোটের সম্প্রসারণ ও ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ নতুন কিছু নয়। তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হুঁশিয়ারি বিশ্বরাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয়—এই অবস্থানে ব্রিকসভুক্ত এবং সম্ভাব্য সদস্য রাষ্ট্রগুলো কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button