আন্তর্জাতিক

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: দুই মিনিটে ‘মনোযুদ্ধ’ নাকি কূটনৈতিক ফাঁদ?

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বহুল আলোচিত আলাস্কা বৈঠক, ট্রাম্প বলছেন দুই মিনিটেই পুতিনের মনোভাব বুঝতে চান তিনি

এবিএনএ:  আগামী শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বসছে বহুল আলোচিত ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, আলোচনার প্রথম দুই মিনিটেই তিনি বুঝে ফেলতে চান পুতিনের আসল পরিকল্পনা। যদি মনে হয় সমঝোতার সুযোগ নেই, তবে তিনি আলোচনা মাঝপথেই থামিয়ে দিতে প্রস্তুত।

এদিকে রিপাবলিকান দলের কিছু নেতার আশঙ্কা, পুতিন হয়তো দীর্ঘ আলোচনা টেনে ট্রাম্পকে নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে রাশিয়ার বিজয়ের শর্তগুলোতে ট্রাম্পকে রাজি করাতে কৌশলী মনস্তাত্ত্বিক খেলা খেলতে পারেন তিনি। এই বৈঠক হতে যাচ্ছে এমন এক জায়গায়—আলাস্কা—যেটি ১৮৬৭ সালে রাশিয়া ৭২ লাখ মার্কিন ডলারে বিক্রি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে ‘ভূমি বিনিময়’ নিয়েও কথা বলতে চান।

নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সোমবার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছেন, পুতিনের মনোভাব যাচাই করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। যদি চুক্তির সম্ভাবনা না দেখেন, তবে তিনি বৈঠক শেষ না করেই সরে আসবেন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন নিজেদের মতো করে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যেকোনো সমঝোতা অবশ্যই যুদ্ধবিরতি দিয়ে শুরু হওয়া উচিত, যাতে আলোচনার সময় হামলা বা ভূমি দখল না ঘটে। এই আলোচনায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

হোয়াইট হাউস এই বৈঠক আয়োজন করছে বেশ তড়িঘড়ি করে, যা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। এখনো ঠিক হয়নি আলাস্কার কোন স্থানে বৈঠক হবে কিংবা কতক্ষণ চলবে। সমালোচকরা বলছেন, পুতিন প্রশংসা ও কৌশলের মাধ্যমে ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে পারেন, বিশেষ করে যখন ট্রাম্প এর আগে ইউক্রেনের ওপর রুশ আগ্রাসনের জন্য কিয়েভকেই দায়ী করেছিলেন এবং জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

যুদ্ধের সমাধান বা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব নিয়ে ট্রাম্প কিছু না বললেও তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন—চুক্তি করা তাঁর প্রধান লক্ষ্য। এই বৈঠকের ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ ও কৌতূহল উভয়ই তুঙ্গে বিশ্বজুড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button