

এবিএনএ : ভাষা আন্দোলনের চেতনায় ঋদ্ধ অমর একুশে বইমেলা ২০২২ শুরু হচ্ছে আজ। বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ মেলার উদ্বোধন করবেন। ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের বইমেলা। করোনার কারণে দুই সপ্তাহ পর শুরু হওয়া এ মেলা আপাতত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে সময় বাড়তে পারে। তবে কঠোরভাবে মানা হবে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়া বইমেলায় প্রবেশ করা যাবে না। লাগতে পারে টিকা সনদও।
বইমেলা উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তিনি বলেন, মহান একুশের চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মুক্তবুদ্ধির চর্চা, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার জন্য বর্তমানে দেশে অত্যন্ত সুন্দর ও আন্তরিক পরিবেশ বিরাজ করছে। অমর একুশে বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এ মেলা আমাদের জীবনবোধ ও চেতনাকে প্রতিনিয়ত শানিত করছে। বাণীতে তিনি বইয়ের মাধ্যমে মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে লেখক ও প্রকাশকদের প্রতি আহ্বান জানান। অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেবেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর। অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২১ প্রদান করা হবে। বইমেলা নিয়ে বাংলা একাডেমিতে রোববার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, সচিব আবুল মনসুর, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলা একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান, বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট দেওয়া হয়েছে। প্যাভিলিয়ন থাকছে ৩৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের। এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এম্ফি থিয়েটারের পূর্বদিকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে। সেখানে ১২৭টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। এবারও শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। তবে কোভিড পরিস্থিতির কারণে প্রথমদিকে ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে না। থাকবে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪টি প্রবেশ ও ৩টি বাহির পথ থাকবে। সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। মেলা এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে প্রতিদিন বিকাল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের এ বছর প্রকাশিত গুণগত মান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩ প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে। এছাড়া এ বছর প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’। স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে। ছুটির দিন ছাড়া বইমেলা ১৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পর নতুন কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
Share this:
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
- Click to share on X (Opens in new window) X
- Click to share on LinkedIn (Opens in new window) LinkedIn
- Click to share on Reddit (Opens in new window) Reddit
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window) WhatsApp