অর্থ বাণিজ্যলিড নিউজ

বিদেশি সংস্থার হাতে দেশের নীতিনির্ধারণ: পিআইবিতে আনু মুহাম্মদের ক্ষোভ

পিআইবির মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা বললেন—গোপন চুক্তি ও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সতর্ক হওয়া জরুরি, নইলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশীয় অর্থনীতি

এবিএনএ: রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউটে (পিআইবি) অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করেছেন, দেশের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় মূল ভূমিকা রাখছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা ও আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। তার দাবি, এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছেন দেশের প্রভাবশালী আমলা ও ব্যবসায়ীরা।

সভাটি আয়োজন করে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট। সেখানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের সমন্বয়কারী বারাকাত উল্লাহ মারুফ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, “শেখ হাসিনার আমলে যারা নীতি ঠিক করতেন, ড. ইউনূসের আমলেও তারাই সক্রিয়। বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীরা পূর্বের উন্নয়ন মডেলকে ‘মিরাকল’ বললেও এখন তারা নিজেরাই নীতি নির্ধারণ করছে। উপদেষ্টারাও এতে উৎসাহী।”

গোপন চুক্তির সমালোচনায় তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হলে জনগণকে জানানো উচিত। কিন্তু অতীতে করা গোপন চুক্তি প্রকাশ করা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগ ছিল, কিন্তু তারা তা কাজে লাগায়নি।”

সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশ এখনও এলডিসি উত্তরণের জন্য প্রস্তুত নয়। ২০২৬ সালের নভেম্বরে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নেওয়ার সময় আসছে, তবে অর্থনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এফটিএ আসলে জোরপূর্বক বাণিজ্য চুক্তি। বিদেশ থেকে সস্তায় গরুর মাংস আমদানি হলে দেশীয় বাজার ও লাখো ক্ষুদ্র খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বিশেষ করে নারীরা যারা গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।”

তিনি দেশীয় সম্পদ কাজে লাগানোর উপর জোর দিয়ে বলেন, “সি উইড ও কুচিয়া রপ্তানিতে সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের আমদানি কমিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে হবে।”

সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ মাসুদ, অ্যাডভোকেট তাসলিমা জাহান এবং থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জেনেভা ভিত্তিক গবেষক সানিয়া রিড স্মিথসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button