আগামী পাঁচদিন সারাদেশে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, সতর্ক থাকার পরামর্শ
জুলাইজুড়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রসহ মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর


এবিএনএ: জুলাই মাসের শুরুতেই দেশের আবহাওয়া বৈচিত্র্যে ভরপুর হয়ে উঠেছে। একদিকে যেমন মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি দেশের কোথাও কোথাও বয়ে যেতে পারে মৃদু তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের প্রায় সব বিভাগেই হালকা থেকে ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।
বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ৩টি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে, যার একটি মৌসুমি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। একইসঙ্গে পাঁচ-ছয়দিন বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।
পরিচালক মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, “জুলাই মাসে একাধিক এলাকায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকতে পারে।”
প্রথমার্ধে দেশের প্রধান নদ-নদীতে পানির স্তর বাড়বে বলে জানা গেছে। জুন মাসে দেশে স্বাভাবিকের তুলনায় ১৯.৩ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে, ঢাকায় এই ঘাটতি প্রায় ৩৩ শতাংশ।
অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে আরও জানানো হয়েছে, মৌসুমি বায়ু এখন দেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থানে রয়েছে। এর ফলে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষ করে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ জায়গায় এবং অন্যান্য বিভাগেও কিছু এলাকায় দমকা হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবারও একই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ১-১০ মিমি বৃষ্টিকে হালকা, ১১-২২ মিমি মাঝারি, ২৩-৪৩ মিমি মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪-৮৮ মিমি ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি হলে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গত শুক্রবার সাগরে লঘুচাপ তৈরি হওয়ায় তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি হয়েছিল, যা বুধবার তুলে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ঝড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, “জুলাই মাসে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সাধারণত বৃষ্টি হয়। এখন বৃষ্টিপাত বাড়ছে, আগামী পাঁচ দিনও এই প্রবণতা বজায় থাকবে।” বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি এবং ঢাকায় ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সপ্তাহজুড়ে এই বৃষ্টিপ্রবণ আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে, ফলে জনসাধারণকে সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।