জাতীয়লিড নিউজ

পরিবেশ ধ্বংস করে নয়, টেকসই উন্নয়নই চাই: প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বার্তা

নদীপ্রবাহ, জনসংখ্যা পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক সংযোগ বিবেচনায় নিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প নেয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের

এবিএনএ:  বুধবার (১৮ জুন) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সমন্বিত অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন’ প্রকল্প নিয়ে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন।

প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ কোনোভাবেই ব্যাহত করা যাবে না। বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক ও ব-দ্বীপ অঞ্চল, তাই পানিপ্রবাহ রক্ষা করা জাতীয় নিরাপত্তার অংশ।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হো ইউন জোং, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা, সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

প্রধান উপদেষ্টা তিনটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন—
১. নদী ও পানিপ্রবাহ সংরক্ষণ,
২. অঞ্চলভিত্তিক জনসংখ্যা ও বন্যার ঝুঁকি বিবেচনা,
৩. আন্তর্জাতিক সংযোগ ও আঞ্চলিক বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা

তিনি বলেন, “অনেক সময় দেখা যায়, উন্নয়ন প্রকল্প বন্যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। উঁচু রাস্তা, সেতু বা রেলপথ বানানোর সময় সেই অবকাঠামো জনগণের জন্য আশ্রয় হবে, না বিপদ ডেকে আনবে—তা ভাবতে হবে।”

এ সময় তিনি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের উপযোগী করিডোর পরিকল্পনার আহ্বান জানান এবং প্রকল্পে পানি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করার পাশাপাশি একটি জাতীয় মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেন।

সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান উদাহরণ টেনে বলেন, “হাওর এলাকায় এক সময় বিশাল সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল, কিন্তু পরে দেখা গেছে তা পুরো ইকোসিস্টেম ধ্বংস করেছে এবং মানুষকে চরম বন্যায় ফেলেছে। তাই প্রকল্পের আগে পরিবেশগত প্রভাব ভালোভাবে বিবেচনা জরুরি।”

এই বৈঠকে উন্নয়নকে টেকসই, সমন্বিত ও পরিবেশবান্ধব রাখার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button