আন্তর্জাতিক

যুদ্ধবিরতির পরও থামেনি উত্তেজনা: শ্রীনগরে বিস্ফোরণ, পেশোয়ারে ড্রোন আতঙ্ক!

যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শ্রীনগরে বিস্ফোরণ ও পেশোয়ারের আকাশে ড্রোন ঘিরে ছড়াল নতুন করে উদ্বেগ, সীমান্ত জুড়ে বাড়ছে নিরাপত্তা সতর্কতা।

এবিএনএ:   যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারত পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে ফের শুরু হয়েছে উত্তেজনা। শনিবার রাতেই ভারতশাসিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, আর পাকিস্তানের পেশোয়ারে ড্রোন উড়তে দেখা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) একাধিক পোস্টে জানান, শ্রীনগরের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিডিওতে দেখা যায়, আকাশে ড্রোন লক্ষ্য করে বিমানবিধ্বংসী বন্দুক থেকে গুলি চালানো হচ্ছে।

একই সময়, পাকিস্তানের পেশোয়ার শহরের আকাশেও ড্রোন শনাক্ত হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী দ্রুত তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে। যদিও ড্রোনটি কারা পরিচালনা করছিল—তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি।

বিস্ফোরণ ড্রোনের উপস্থিতি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ভারত পাকিস্তান উভয়ই সন্ধ্যা ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রাতেই তা নিশ্চিত করেছিলেন।

ওমর আবদুল্লাহ এক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই কি সেই যুদ্ধবিরতি? শ্রীনগরে চারপাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা যেন কাগজে কলমেই রয়ে গেল।” তিনি আরও একটি ভিডিওতে জানান, “বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো এখনো শ্রীনগরের ভেতর গুলি চালাচ্ছে।”

শ্রীনগর থেকে বিবিসি উর্দুর প্রতিবেদক রিয়াজ মাসরুর জানান, শহরের বিভিন্ন অংশে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেলেও সেগুলোর উৎস বা প্রকৃতি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে ভারতের গুজরাট রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাঙ্ঘভি জানান, কচ্ছ জেলায় একাধিক ড্রোন দেখা গেছে এবং নিরাপত্তার কারণে সেখানে ‘ব্ল্যাকআউট’ কার্যকর করা হচ্ছে। তিনি সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে ঘরের ভিতরে অবস্থান করার অনুরোধ জানান।

পাঞ্জাবের লুধিয়ানা, পাতিয়ালা অমৃতসর জেলার প্রশাসনও সতর্কতা জারি করে জানায়, এখনো বড় ধরনের কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্ল্যাকআউট কার্যকর হতে পারে।

রাত প্রায় ১১টার দিকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, “যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত বারবার লঙ্ঘিত হচ্ছে। আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দিতে বলেছি এবং পাকিস্তানকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।”

প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাকিস্তানের পক্ষ থেকে মিশ্রির বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Share this content:

Back to top button