জাতীয়

রংপুরে সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িতে হামলা: বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে আসকের কড়া নিন্দা

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কিশোর আটক, এরপর উসকানিমূলক প্রচারে সংঘবদ্ধ হামলা—আসক বলছে, এটি সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য

এবিএনএ: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আসক জানায়, একজন কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগকে কেন্দ্র করে পুরো একটি সম্প্রদায়ের ওপর যে সহিংসতা চালানো হয়েছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।


⚠️ কী ঘটেছিল রংপুরের বেতগাড়ীতে?

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত কিশোর স্থানীয় একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তাকে গ্রেপ্তার করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

কিন্তু মামলার প্রক্রিয়া চলাকালে মাইক ব্যবহার করে এলাকায় উসকানিমূলক প্রচার চালানো হয়। এরপর একদল উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি সংগঠিত হয়ে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে অনেক ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয় এবং এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


🛑 আসকের উদ্বেগ ও দাবি

আসক বলছে, “ধর্মীয় অনুভূতিকে অস্ত্র বানিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রবণতা ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বারবার এমন ঘটনা ঘটলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপরাধীরা থেকে যাচ্ছে বিচারের বাইরে।”

এই বিচারহীনতা সাংবিধানিক অধিকার ও রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতার পরিপন্থী বলেও সংস্থাটি মনে করে।


📢 আসকের তিন দফা দাবি:

১. হামলায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা
২. আক্রান্ত পরিবারগুলোর নিরাপত্তা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ
৩. ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় রাষ্ট্রের কার্যকর ও বলিষ্ঠ ভূমিকা নিশ্চিত করা

আসক মনে করে, এ ধরনের হামলার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নিলে ভবিষ্যতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা আরও সংকটে পড়বে এবং সমাজে বিভেদ আরও গভীর হবে।

এই ঘটনায় দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—যেখানে আইনের শাসন ও সংবিধানের মূলনীতি বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button