ছয় বছরে অপহরণের রেকর্ড: আট মাসেই সর্বাধিক মামলা, বেড়েছে খুন ও দস্যুতা
অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের মধ্যেও ২০২৫ সালের আট মাসে সর্বাধিক অপহরণ রেকর্ড, পুলিশি পরিসংখ্যানে অপরাধের চিত্র উন্মোচিত


এবিএনএ: অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের মধ্যেও চলতি বছরে অপরাধের হার বেড়েছে। বিশেষ করে অপহরণের ঘটনা রেকর্ড ছুঁয়েছে নতুন মাত্রা। পুলিশি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে ৭১৬টি অপহরণের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। এটি গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বাধিক।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে অপহরণের ঘটনা ছিল ৬৪২টি, ২০২৩ সালে ৪৬৩টি, ২০২২ সালে ৪৬০টি, ২০২১ সালে ৪৪৫টি এবং ২০২০ সালে ৪৮৬টি। অর্থাৎ চলতি বছরের আট মাসেই আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে অপহরণের হার বেশি।
শুধু অপহরণই নয়, অন্যান্য অপরাধেও উদ্বেগজনক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। চলতি বছরের আট মাসে ডাকাতি ঘটেছে ৪৮৮টি, যা ২০২৪ সালের ৪৯০টির কাছাকাছি। দস্যুতার ঘটনাও বেড়েছে—এ বছর ১ হাজার ৩১৪টি রেকর্ড হলেও গত বছর তা ছিল ১ হাজার ৪০৫টি।
দাঙ্গার চিত্রও জটিল। ২০২০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট দাঙ্গার ঘটনা ছিল ৭৭টি, ২০২৪ সালে তা হঠাৎ বেড়ে দাঁড়ায় ১২৫টিতে। তবে চলতি বছরের আট মাসে এই সংখ্যা ৫৯।
অন্যদিকে, চুরির হার কিছুটা কমেছে। চলতি বছরের আট মাসে ৬ হাজার ৩৪৫টি চুরির ঘটনা রেকর্ড হয়েছে, যেখানে ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৫৯১টি চুরির ঘটনা ঘটেছিল।
পুলিশি পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালের আট মাসে ২ হাজার ৬১৬টি খুন এবং ১৫ হাজার ৪৯টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান সংক্রান্ত মামলার সংখ্যাও কমেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, অপরাধের হার কিছুটা বেড়েছে মনে হলেও এর একটি বড় কারণ হলো—এখন মানুষ রাজনৈতিক প্রভাবশালী অপরাধীদের বিরুদ্ধেও ভয় ছাড়াই মামলা করতে পারছে। এছাড়া, গত ১৩ মাসে খুনের হার বেশি মনে হলেও তার মধ্যে অন্তত ১ হাজার ১৩০টি খুন শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে সংঘটিত হলেও মামলা দায়ের হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের পর।