অর্থ বাণিজ্য

আন্দোলন থামিয়েও রেহাই নেই! এনবিআরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, বিপাকে মধ্যস্থতাকারীরা

আন্দোলন প্রত্যাহারের পরও এনবিআরের কয়েক কর্মকর্তা বরখাস্ত ও অবসর, দুর্নীতির তদন্তে দুদক; বিব্রত ব্যবসায়ী মধ্যস্থতাকারীরা

এবিএনএ:  এনবিআরের চলমান উত্তেজনার মাঝেই সরকার চারজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে অবসর ও এক কমিশনারকে বরখাস্ত করেছে। এদের মধ্যে আছেন এনবিআরের কর, শুল্কনীতি, মূসক নীতি ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আরও আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে।

আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা ব্যবসায়ী নেতাদের অনুরোধে আন্দোলন থামিয়ে কাজে ফিরেছিলেন। সরকারের আশ্বাস ছিল—কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। কিন্তু বর্তমানে যা ঘটছে, তা পুরোপুরি উল্টো। এতে বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন মধ্যস্থতাকারী ব্যবসায়ী নেতারাও।

বুধবার যাদের অবসরে পাঠানো হয়েছে তারা হলেন এনবিআরের কর বিভাগের আলমগীর হোসেন, শুল্কনীতি ও আইসিটি বিভাগের হোসেন আহমদ, মূসক নীতি বিভাগের আবদুর রউফ ও কমিশনার মো. শব্বির আহমেদ। এর আগে মঙ্গলবার বরখাস্ত করা হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার জাকির হোসেনকে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় চারজনকে জনস্বার্থে অবসর দেওয়া হয়েছে।

বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম পারভেজ বলেন, “ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতা করা হয়েছিল দেশের স্বার্থে। সরকার আশ্বস্ত করেছিল, কারও চাকরি যাবে না। এখন যা হচ্ছে, তাতে আমরাও বিব্রত।”

আন্দোলন প্রত্যাহারকারী কর্মকর্তারা জানান, সরকারের প্রতিশ্রুতি ও মধ্যস্থতাকারী ব্যবসায়ীদের সম্মান রক্ষায় তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন বন্ধ করেন। কিন্তু এখন সেই কর্মকর্তারাই শাস্তির মুখে।

দুদক একাধিক দফায় এনবিআরের সদস্য ও অতিরিক্ত কমিশনারদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে অবৈধ অর্থ উপার্জন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, “বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বন্ধ করে আন্দোলন করা সমর্থনযোগ্য নয়, তবে সরকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা উচিত ছিল। যেভাবে কর্মকর্তাদের মনোবল ভাঙা হচ্ছে, তা দেশের জন্যও ক্ষতিকর।”

উল্লেখ্য, গত মে মাসে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভাজনের পর থেকেই এনবিআরের কর্মকর্তারা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। সরকারের আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক বন্ধ হলেও, সাম্প্রতিক ঘটনায় আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে রাজস্ব প্রশাসনে।

সরকারের কঠোর অবস্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা এখন আরও সতর্ক এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধান চান বলে জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button