নেপালের তরুণদের অভিযোগ: শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কেড়ে নিল ‘সুযোগসন্ধানীরা’
জেন-জি প্রজন্মের দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে সহিংসতায় রূপ দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।


এবিএনএ: নেপালে সাম্প্রতিক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গভীর ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা থেকেই এই আন্দোলনের সূচনা। তবে শান্তিপূর্ণ সেই প্রতিবাদ দ্রুতই সহিংস রূপ নেয়।
নিজেদেরকে ‘জেন জি’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া তরুণরা অভিযোগ তুলেছে— তাদের আন্দোলনকে কিছু ‘সুযোগসন্ধানী’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে। বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তারা স্পষ্ট করে বলেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, কিন্তু সরকারি স্থাপনা, রাজনীতিবিদদের বাড়ি এমনকি সংসদ ভবনে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা তাদের উদ্দেশ্যের প্রতিফলন নয়।
এদিকে সহিংসতা বেড়ে গেলে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। শূন্যতা তৈরি হওয়ায় সেনাবাহিনী রাস্তায় নেমে আসে। তারা এখন পর্যন্ত ২৭ জনকে গ্রেপ্তার এবং ৩১টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রাজেন্দ্র বসনেট জানিয়েছেন, তারা সহিংসতার সুযোগ নেওয়া দুষ্কৃতীদের দমন করছে এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত।
জেন-জি প্রজন্ম এখন নতুন দাবি-দাওয়ার তালিকা তৈরি করছে। তাদের অন্যতম দাবি, ভবিষ্যতের নেতৃত্ব যেন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে যোগ্যতা ও সততার ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়।
কাঠমান্ডুর রাস্তায় কিছু তরুণকে আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি পরিষ্কার করতেও দেখা গেছে। ১৪ বছর বয়সী কাসান লামা বলেন, “দুর্নীতি অনেক দিন ধরেই চলছে, এখন সময় পরিবর্তনের।” আরেক তরুণ পরাশ প্রতাপ হামালের মতে, নেপালের এখন স্বাধীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব দরকার।
তবে অনেকেই সহিংসতায় বিস্মিত। ৩৬ বছরের রাকেশ নিরাউলা বলেন, “এভাবে হওয়া উচিত ছিল না।”
সবকিছুর মাঝেই সাধারণ নেপালি নাগরিকরা বিশ্বাস করছেন, এই আন্দোলন ভবিষ্যতের জন্য এক নতুন দিশা হয়ে উঠতে পারে, যা দেশকে রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে বের করে আনবে।