রাতুল নেই, তবু প্রতিটি সুরে তার স্পর্শ খুঁজে ফেরেন রাহুল
প্রয়াত ভাইয়ের স্মৃতি আর ভালোবাসায় ভিজে রাহুলের হৃদয়স্পর্শী বার্তা—"তিন ভাই মিলে যা করতাম, আব্বুর সাথে শেয়ার কইরো"


এবিএনএ: প্রয়াত চিত্রনায়ক জসীমের তিন ছেলে—এ কে সামী, এ কে রাতুল ও এ কে রাহুল। বাবার পথ অনুসরণ করে অভিনয়ের জগতে না গিয়ে তারা তিনজনই ডুবে গেছেন সুরের জগতে। ছোটবেলাতেই পিতৃহারা হওয়া এই তিন ভাই একে অপরের হাত ধরে বেড়ে ওঠেন। হঠাৎ করেই সেই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আসে ছেদ—রবিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান মেজো ভাই রাতুল।
ভাই হারানোর এই বেদনাকে হৃদয়ে ধারণ করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগঘন এক বার্তা দিয়েছেন ছোট ভাই রাহুল। তার প্রতিটি শব্দ যেন এক ছিন্নভিন্ন হৃদয়ের আর্তনাদ, যেখানে ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা ও স্মৃতিই হয়ে উঠেছে ভাষার চেয়েও শক্তিশালী মাধ্যম।
রাহুল লেখেন—
“স্ক্রল করি আর দেখি, সবাই কত ভালোবাসছে আমার ভাইটারে। মন ভাঙতেছে বারবার। আমি প্রতিদিন আমার ভাইকে নিয়ে কিছু না কিছু বলবো, কেউ কিছু মনে নিয়েন না। ধন্যবাদ সবাইকে, আমাদের ভাইটারে ভালোবাসার জন্য।”
এরপর একে একে উঠে আসে দুই ভাইয়ের না বলা গল্প, হারানো বন্ধুত্বের মুহূর্ত আর বিশ্বাসের স্মৃতি।
“এই দুনিয়ায় একটা এ কে রাতুল ছিলো। এরকম মানুষ দ্বিতীয়টা আসবে না। ভাই, আমি কথা দিছি—আমি যা করতাম, সব করবো আগের মতোই। তুমি যে গিটার টোনে শো শেষে ঠেলতারে, এখন তো কেউ নাই। তবুও করে যাবো, শুধু তোমার জন্য। ওপরে থেকে হাসবি কিন্তু।”
রাহুল স্মৃতিচারণ করেন আরও—
“রেসলিংয়ের খবর তো আর দিতে পারবো না। তোমার জন সিনা কতোদিন থাকবে আর? জিটিএ-৬ রিলিজ পিছায়া যাওয়ায় খুব মন খারাপ করছিলো তোর। তোর কনসোলেই শেষ করবো ওইটা, কথা দিলাম।”
সবশেষে, ভাই রাহুল বলেন—
“আব্বুর সাথে সব বলিস, তিন ভাই মিলে কী কী করতাম। একটু ফিল্টার কইরো, হাহাহা।”
জানা গেছে, সামী ও রাতুল মিলে গড়ে তুলেছিলেন ব্যান্ড ‘ওন্ড’। সামী ছিলেন ড্রামার, রাতুল মূল ভোকাল ও বেজ গিটারিস্ট। পাশাপাশি রাতুল শব্দ প্রকৌশলী হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন। আর রাহুল কাজ করছেন একজন ফ্রিল্যান্স মিউজিশিয়ান হিসেবে।
ভাই হারিয়ে রাহুল যেন এখনো ছুটে চলেছেন সেই পুরনো দিনের সুরে, যেখানে প্রতিটি নোটে বাজে একজন এ কে রাতুলের অমর উপস্থিতি।