

এবিএনএ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে জয়ী হয়েছেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেল থেকে আব্দুর রশিদ জিতু। আর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয় পেয়েছেন ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী’ প্যানেলের শিবির সমর্থিত প্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৮ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন। ভিপি প্রার্থী জিতু পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৩৪ ভোট, আর জিএস প্রার্থী মাজহার পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৩০ ভোট।
এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ফেরদৌস আল হাসান (২,৩৯৮ ভোট) এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে দর্শন বিভাগের আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা (৩,৪০২ ভোট) নির্বাচিত হয়েছেন।
অন্য বিজয়ীরা হলেন—
-
শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক: আবু উবায়দা উসামা (ফার্মেসি, ২৪২৮ ভোট)
-
পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্পাদক: সাফায়েত মীর (গণিত, ২৮১১ ভোট)
-
সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক: জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি (ইংরেজি, ১৯০৭ ভোট)
-
সাংস্কৃতিক সম্পাদক: শেখ জিসান আহমেদ (২০১৮ ভোট)
-
সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক: রায়হান উদ্দিন (উদ্ভিদবিজ্ঞান, ১৯৮৬ ভোট)
-
নাট্য সম্পাদক: রুহুল ইসলাম (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব, ১৯২৯ ভোট)
-
ক্রীড়া সম্পাদক: মাহমুদুল হাসান কিরণ (বাংলা বিভাগ, ৫৭৭৮ ভোট)
-
সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (ছাত্র): মাহাদী হাসান (মাইক্রোবায়োলজি, ২১০৫ ভোট)
-
সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (ছাত্রী): ফারহানা লুবনা (গণিত, ১৯৭৬ ভোট)
-
আইটি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক: রাশেদুল ইমন লিখন (ফার্মেসি)
-
সমাজসেবা সম্পাদক: আহসান লাবিব (১৬৯০ ভোট)
-
সহ-সমাজসেবা সম্পাদক (ছাত্র): তৌহিদ হাসান (মাইক্রোবায়োলজি, ২৪৪২ ভোট)
-
সহ-সমাজসেবা সম্পাদক (ছাত্রী): নিগার সুলতানা (ফার্মেসি, ২১৬৬ ভোট)
-
স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা সম্পাদক: হুসনী মোবারক (প্রাণিবিদ্যা, ২৬৫৩ ভোট)
-
পরিবহন সম্পাদক: তানভীর রহমান (পরিবেশ বিজ্ঞান, ২৫৫৯ ভোট)
কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন— ফাবলিহা জাহান নাজিয়া (২৪৭৫), নাবিলা বিনতে হারুন (২৭৫০), নুসরাত জাহান ইমা (৩০১৪), হাফেজ তরিকুল ইসলাম (১৭৪৬), আবু তালহা (১৮৫৪) ও মোহাম্মদ আলী চিশতী (২৪১৪)।
নির্বাচন প্রক্রিয়া ও উপস্থিতি
এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১,৭৪৩ জন। এর মধ্যে ৮,০০৩ জন ভোট দেন, যা মোট ভোটের প্রায় ৬৮ শতাংশ। ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে ৯ জন, জিএস পদে ৮ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া হল সংসদে লড়েছেন আরও ৪৪৫ প্রার্থী।
ভোটগ্রহণের আগের রাতে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ভোট গণনার মেশিন সরবরাহকারীকে নিয়ে আপত্তি তোলে। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন হাতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেয়। ভোটগ্রহণ শেষে দীর্ঘ প্রায় ৪০ ঘণ্টা ধরে চলে ভোট গণনা। তবে বাম সংগঠন ও ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেল নানা অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করে।
বর্জন ও বিতর্কের মধ্যেও অবশেষে প্রকাশিত হলো বহু প্রতীক্ষিত জাকসু নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল।